হোম > সাক্ষাৎকার

আগামী ১০ বছরে বিশ্বে স্বর্ণের সংকট দেখা দেবে

ফারুক মেহেদী

আজকের পত্রিকা: দেশের স্বর্ণের ব্যবসা এখন কেমন? 
আনোয়ার হোসেন: কোভিডের কারণে সবাই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত। শুধু আমাদের বিজনেস নয়; সবার ব্যবসাই খারাপ গেছে। ক্রেতাদের চাহিদা নির্ভর করে তাদের আয় ও অর্থনীতির ওপর। সারা পৃথিবীর অবস্থাই খারাপ। তা ছাড়া সোনার ব্যবসা হলো সবার শেষের ব্যবসা। মানুষ অন্য সব চাহিদা পূরণের পর আসে সোনার বাজারে। আগে বেঁচে থাকার রসদ মেটানোর পর এদিকে আসে। মানুষের হাতে টাকা থাকলে বা সচ্ছলতা থাকলে তখন শখের বশে মানুষ বিশেষ করে নারীরা সোনা কেনার জন্য মনস্থির করে। সেটাও এখন কম। আরেকটা বিষয় হলো, বিয়েশাদি বা এ-জাতীয় উৎসব-পার্বণ হলে তখন চাহিদা তৈরি হয়। এখন তো এসব উৎসব নেই। গেল দেড় বছরের বেশি সময় বিয়েশাদিও বন্ধ। আর সারা বিশ্বে সোনার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ভরিতেই বেড়েছে ৩০ হাজার টাকার বেশি। 

আজকের পত্রিকা: স্বর্ণের দাম বাড়ছে কেন? 
আনোয়ার হোসেন: শুধু আমাদের দেশে নয়; বিশ্ববাজারে দামটা বেড়েছে। সারা পৃথিবীর অর্থনীতিই যখন নড়বড়ে, কোথাও কিছু হচ্ছে না, এ রকম একটা অবস্থায়, যারা সম্পদশালী, যাদের হাতে নগদ টাকা আছে, তারা বড় বড় শেয়ারবাজার থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। ইউরোপ-আমেরিকার অবস্থা কী হয় না-হয় এমন আশঙ্কা করে। তাই তারা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের দিকে চলে গেছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ধনী রা স্বর্ণ জমা করার দিকে ঝুঁকে যায়। নিজস্ব লকারে স্বর্ণ মজুত করে রাখে।

আজকের পত্রিকা: স্বর্ণ এখন অন্য কাজেও ব্যবহার হচ্ছে। আসলে বিষয়টি কী? 
আনোয়ার হোসেন: চীনে দিনে দিনে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছে। তাদের তৈরি গোল্ড প্লেটিং প্রোডাক্টের বিরাট চাহিদা, তারা এটাকে ওই সব পণ্য উৎপাদনে কাজে লাগায়। এতে চাহিদায় টান পড়ে। এ ছাড়া অনেক দেশ যুদ্ধের অস্ত্র মিসাইল বানাতে, সেখানের ডিভাইসে গোল্ড প্লেটিং ব্যবহার করে। গোল্ড হলো সবচেয়ে বড় গুড কন্ডাক্টর। স্যাটেলাইট, প্লেন, গাড়ি, মেডিকেল যন্ত্রপাতি এ রকম বহুমুখী পণ্যে এখন গোল্ড ব্যবহার হচ্ছে। যার ফলে গয়নায় গোল্ড ব্যবহার আর আগের মতো কাঙ্ক্ষিত নয়। আমাদের দেশে গোল্ড মানে গয়না। পরিসংখ্যান বলছে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে হয়তো বিশ্বে স্বর্ণের সংকট দেখা দেবে। এ ছাড়া স্বর্ণের উত্তোলন কম হচ্ছে। নতুন খনির আবিষ্কার বা খনি থেকে স্বর্ণ উত্তোলন কমে গেছে।

আজকের পত্রিকা: স্বর্ণ নীতিমালাটা এ ব্যবসার জন্য কতটা সহায়ক? 
আনোয়ার হোসেন: আমি এ নীতিমালা তৈরির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। আগে আমরা স্থানীয় বাজার থেকে যে স্বর্ণ পেতাম, এর মূল উৎস আসলে অজানা ছিল। নীতিমালার কারণে এ স্বর্ণটা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে এসেছে। এ জন্য ১৮টি কোম্পানিকে ও একটি ব্যাংককে ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে। তবে ডিলাররা লাভ করতে পারছে না। কারণ, এর পেছনে অতিরিক্ত ১৮ শতাংশ কর ও শুল্কের কারণে মোট করের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। যে কারণে যারা আনবে, তারা আনতে 
পারছে না।

আজকের পত্রিকা: নীতিমালার ফলে কি বাজারে শৃঙ্খলা আসবে? 
আনোয়ার হোসেন: বিশৃঙ্খলা হয় মূলত বিশ্ববাজারে দাম কম বাংলাদেশে বেশি হওয়ার ফলে। এ কারণেই যত অনিয়ম। প্রবাসীরা স্বর্ণগুলো আনত। বিভিন্নভাবে মানি লন্ডারিং হতো। এখন সব বন্ধ। দেখেন রিজার্ভ বেড়ে গেছে। এখন তো চাইলেই পাঠাতে পারে না। বিমান চলাচল বন্ধ। যদি বিশ্ববাজারের সঙ্গে করের হার সামঞ্জস্য করা হয়, তাহলে স্বর্ণের এই চোরাকারবারি বন্ধ হয়ে যাবে। না হলে যদি ভরিপ্রতি এক হাজার টাকাও কম হয়, দেশে 
চোরাইপথে স্বর্ণ আসবে। শুধু তা-ই নয়, এসব স্বর্ণ বিনিময় হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। তাদেরও অনেক চাহিদা। বিভিন্ন পণ্য আসছে, এর মধ্যে বৈধের চেয়ে অবৈধ বেশি। এসবের দায় শোধ হয় স্বর্ণ দিয়ে। 

আজকের পত্রিকা: সামনে এ ব্যবসা কেমন হতে পারে? 
আনোয়ার হোসেন: এ অঞ্চলের নারীরা স্বর্ণ পছন্দ করে। গয়না হিসেবে এবং আপৎকালীন নিরাপত্তা হিসেবেও স্বর্ণ জমা রাখে। যারই সামর্থ্য আছে, সে স্বর্ণের গয়না তৈরি করে। আমাদের অর্থনীতি যদি এগোতে থাকে, বিয়েশাদি উৎসব বাড়তে থাকে তাহলে ব্যবসাটা অবশ্যই ভালো হবে। তবে চ্যালেঞ্জ হলো, এখনকার নারীরা ভারী গয়না পরতে চায় না। এমনিতেও দাম বেশি, সামর্থ্যের ব্যাপার আছে। সব মিলিয়ে স্বর্ণের চাহিদা দেশে কমছে। তারপরও তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে অবশ্যই তারা স্বর্ণের গয়না কিনবে বলে 
মনে করি। 

সংবাদ উপস্থাপনায় সময় ব্যবস্থাপনা সবার আগে

আমরা কেউ রাজনীতির বাইরে নই

সিজিপিএ ৪–এ ৪, নিলয়ের গলায় ওআইসি স্বর্ণপদক

স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে ভারত বাংলাদেশের মানুষের বিরাগভাজন হলে ‘আমাদের কিছু করার নেই’

দেশে ফেরা, নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে যা বললেন তারেক রহমান

বড় দলগুলোর কথা শুনে জাতীয় সরকার না করে ভুল হয়েছে

ঢাবির শিক্ষার্থীরা এমন সিদ্ধান্ত নেবে ভাবতেই পারিনি

শিক্ষার্থীরা নতুন ধারার ব্যতিক্রমী রাজনীতি চায়

‘দিলের ময়লা’ পাকিস্তানকেই পরিষ্কার করতে হবে— এটা তাদের ঐতিহাসিক দায়

বৈষয়িক ও বাহ্যিক উন্নতি ঘটছে, অন্তরালে বাড়ছে বৈষম্য