পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সতর্ক করে বলেছেন, ভারত আবার হামলা চালাতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আঞ্চলিক উত্তেজনা ক্রমশ বাড়তে থাকায় দেশটি এ ব্যাপারে ‘পূর্ণ সতর্কতায়’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সম্প্রতি সামা টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, ‘আমরা ভারতকে না উপেক্ষা করছি, না কোনো অবস্থাতে ওদের ওপর আস্থা রাখছি। আমার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ভারতের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ বা কোনো ধরনের শত্রুতামূলক কৌশলের সম্ভাবনাকে আমি বাতিল করতে পারি না। সীমান্তে আগ্রাসন হোক বা অন্য কোনো হামলা (আফগান সীমান্তের অস্থিরতা)। আমাদের অবশ্যই সর্বক্ষণ সতর্ক থাকতে হবে।’
পাকিস্তানের এই সতর্কতা এসেছে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর একটি মন্তব্যের কয়েক দিন পর। সম্প্রতি জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী ‘অপারেশন সিঁদুর’কে ‘৮৮ ঘণ্টার ট্রেলার’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যদি পরিস্থিতি দাবি করে, তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানকে ‘পড়শির সঙ্গে কীভাবে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হয়’ তা দেখিয়ে দিতে প্রস্তুত।
চলতি বছরের ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলার জেরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা হঠাৎ তীব্র আকার ধারণ করে। ওই হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা ‘দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ ওই হামলার দায় স্বীকার করে।
এরপর ভারত কূটনৈতিকভাবে কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে ছিল সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত রাখা। তাতে সাড়া না পেয়ে ভারত সামরিক জবাব হিসেবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করে। এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে সুনির্দিষ্ট বিমান হামলা চালায় ভারত। এতে ১০০-এর বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি করে ভারত।
ভারতের হামলার পর টানা চার দিন সীমান্তজুড়ে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চলে। উত্তেজনা চরমে উঠলে শেষ পর্যন্ত ১০ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।