গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার সমালোচনা করে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসওম্যান রাশিদা তালিব। ইসরায়েলের সমালোচনা করায় গত মঙ্গলবার কংগ্রেসে তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয় নিন্দা প্রস্তাব।
সেখানে নিজের অবস্থানের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে রাশিদা তালিব বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি শিশুদের কান্নার আওয়াজ আমার কাছে একই রকম শোনায়। জানি না, কেন ফিলিস্তিনিদের কান্না আপনাদের সবার কাছে আলাদা লাগে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একমাত্র ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কংগ্রেসওম্যান রাশিদা বলেন, ‘বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমাকে এসব বলতে হবে। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের জীবন তো মূল্যহীন নয়। আমরা বাকি সবার মতোই মানুষ। সব ফিলিস্তিনির মতো আমার দাদিও স্বাধীনভাবে প্রাপ্য মানবিক মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। মিস্টার চেয়ার, নিজস্ব বিশ্বাস ও জাতীয়তা নির্বিশেষে এই চেম্বারে জীবন বাঁচানোর জন্য কথা বলা কখনোই বিতর্কিত হওয়া উচিত নয়।’
কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন রাশিদা তালিব। কথার মাঝখানে প্রায় ২০ সেকেন্ডের মতো থেমেও থাকেন মিশিগানের এই ডেমোক্র্যাট। বারবার কেঁপে উঠছিল তাঁর কণ্ঠ। এ সময় মিনেসোটার কংগ্রেসওম্যান ইলহাম ওমার এগিয়ে এসে রাশিদা তালিবকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কথা বলার সময় নিজ দাদির ছবিও দেখান রাশিদা তালিব।
মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডিয়ারবর্নে আরব-আমেরিকান সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের বসবাস। আর রাশিদা তালিব যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একমাত্র ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কংগ্রেসওম্যান। রাশিদা বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ফিলিস্তিনের গাজা ও পশ্চিম তীরে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই গণহত্যার তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি।
ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ৪০৫ জন নিহত হয়। জিম্মি করা হয় ২৪০ জনকে। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে ফিলিস্তিনি নিহত সাড়ে ১০ হাজার ছাড়িয়েছে।
গাজায় সহায়তা পৌঁছানো অব্যাহত রাখতে গত মঙ্গলবার ইসরায়েলকে মানবিক বিরতিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার চলমান যুদ্ধে মানবিক কারণে সাময়িক বিরতি দেখতে চেয়েছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭। তবে গাজায় নির্বিচারে প্রাণহানি সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির আহ্বান করা থেকে বিরত থেকেছেন এই জোটভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।