ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা গাজি হামাদ বলছেন, চলমান আলোচনার মধ্যে তাঁদের অগ্রাধিকার হচ্ছে যুদ্ধ বন্ধ করা। কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট এবং তা হচ্ছে যুদ্ধের সমাপ্তি। গাজায় যা ঘটছে তা বড় আকারের বিপর্যয়।’
গাজায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চালানো গণহত্যা এবং যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা প্রসঙ্গে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য গাজি হামাদ বলেন, ‘কিছু মানুষ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহী। কিন্তু তাতে হামাস ও ফিলিস্তিনের মানুষের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে না। জিম্মিদের অজুহাতে ইসরায়েল সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেবে এবং তারপর ফিলিস্তিনের মানুষের বিরুদ্ধে আবার শুরু করবে গণহত্যা। আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে এই খেলা খেলব না।’
হামাস পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ বন্ধ করতে চায় বলে গাজি হামাদ বলেন, যুদ্ধ বন্ধ হলে তারা সবার সঙ্গেই আলোচনা করতে প্রস্তুত। এ ছাড়া, গাজায় জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্ত করতে বড় ধরনের ছাড় দেওয়ার জন্যও তৈরি আছে হামাস।
যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য হামাস যে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল ফাতাহর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতেও আগ্রহী, সে কথা সাক্ষাৎকারে বলেছেন গাজি হামাদ। একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অনেকবারই ফাতাহর নেতাদের ডাকা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যে এখনো আমাদের আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছেন, সেটাই সমস্যা।’
গাজি হামাদ আরও বলেন, ‘গাজার বর্তমান পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে কীভাবে মোকাবিলা করতে পারি তা নিয়ে আলোচনার জন্য ফাতাহ এবং ফিলিস্তিনি দলগুলোর ভাইদের সঙ্গে দেখা করতে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী। কিন্তু সে ব্যাপারে কোনো চেষ্টাই ফাতাহ করেনি। আমরা তাঁর (আব্বাস) সঙ্গে আলোচনার জন্য খোলা মনে অপেক্ষা করছি। যুদ্ধ বন্ধ করাই আমাদের অগ্রাধিকার। এরপর আমরা পশ্চিম তীর বা গাজার পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে ভাবতে পারি।’
গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্পষ্ট করে বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে তিনি একটি পুনরুজ্জীবিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজায় দায়িত্ব নিতে দেখতে চান। তবে ফিলিস্তিনিদের আবাস এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস করার ভাবনা আসবে কেবল যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর—এমনটি বলেছেন হামাস নেতা গাজি হামাদ। তবে সে জন্য ফাতাহর পক্ষ থেকে ইতিবাচক পদক্ষেপ আশা করছেন বলেও জানান তিনি।