হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় পুষ্টিকর খাবারের লাইনে দাঁড়ানো শিশুদের ওপর হামলা, নিহত অন্তত ১৫

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ছবি: বিবিসি

গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে পুষ্টিকর খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে আটটি শিশু ও দুজন নারী রয়েছে। স্থানীয় আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাহায্য সংস্থা ‘প্রজেক্ট হোপ’ জানিয়েছে, তাদের পরিচালিত আলতায়ারা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ওই হামলা হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে অপুষ্টি, সংক্রমণ ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত মানুষেরা চিকিৎসার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী ইউসুফ আল-আয়দি এএফপিকে বলেন, ‘হঠাৎ ড্রোনের শব্দ শুনি, তারপরই বিস্ফোরণ। মাটি কেঁপে ওঠে, আর চারপাশ রক্ত আর চিৎকারে ভরে যায়।’

বিবিসির যাচাই করা ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার পর রাস্তায় পড়ে রয়েছে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের দেহ, কেউ নড়ছে না, কেউ গুরুতর আহত।

আল-আকসা হাসপাতালের মর্গে নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন কাঁদতে কাঁদতে সাদা কাপড় আর বডি ব্যাগে মোড়ানো লাশের জানাজা পড়ান। এক নারী জানান, তাঁর গর্ভবতী ভাগনি মানাল ও তাঁর মেয়ে ফাতিমা নিহত হয়েছে। আর মানালের ছেলে এখন আইসিইউতে। অন্তিসার নামের ওই নারী বলেন, তারা শুধু শিশুদের জন্য সাপ্লিমেন্ট নিতে গিয়েছিল।

প্রজেক্ট হোপের প্রেসিডেন্ট রবিহ তোরবে বলেন, ‘আমাদের ক্লিনিকগুলো ছিল আশ্রয়ের জায়গা। যেখানে শিশুদের চিকিৎসা হয়, নারীরা গর্ভকালীন ও পরবর্তী সেবার জন্য আসেন। অথচ আজ সকালে নিরীহ পরিবারগুলোকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো।’

রবিহ তোরবে বলেন, এটা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের জঘন্য লঙ্ঘন। গাজায় এখন কেউই নিরাপদ নয়, এমনকি যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলাকালেও নয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা হামাসের ‘নুখবা’ বাহিনীর এক সদস্যকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। ওই ব্যক্তি গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। তবে তারা সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতির কথা জানে এবং ঘটনাটি পর্যালোচনার আওতায় রয়েছে বলে জানিয়েছে।

একই দিনে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি ড্রোন হামলায় আরও পাঁচজন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনটি শিশু রয়েছে।

এই হামলাগুলো এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দোহায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে। তবে ইসরায়েল ও হামাসের অবস্থানে এখনো ফারাক রয়েছে। ইসরায়েল বলছে, তারা ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চায়। এর মধ্যে হামাস অস্ত্রত্যাগ করলে স্থায়ী শান্তির প্রস্তাব দেওয়া হবে, না হলে অভিযান চলবে। হামাস একে কঠিন আলোচনা বলে উল্লেখ করেছে এবং ইসরায়েলকে অনমনীয় আখ্যা দিয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের দক্ষিণ ইসরায়েল আক্রমণের জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সেখানে অন্তত ৫৭ হাজার ৭৬২ জন নিহত হয়েছে।

এ ছাড়া গাজার ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন-ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি ও পানির তীব্র সংকট চলছে।

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

৭ অক্টোবরের দায় এড়াতে ফন্দি খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু: সাবেক মুখপাত্র

মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন শেখ ফয়সাল নোমান আর নেই

ইসরায়েল আর ‘কখনোই গাজা ত্যাগ করবে না’

তুরস্কে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে লিবিয়ার ‘জাতীয় ঐক্যের সরকারের’ সেনাপ্রধান নিহত

গাজায় ৭৩ দিনে ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের শিকার ৪১১ ফিলিস্তিনি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ৮৭৫ বার

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র