হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

ইরানের যেসব স্থানে হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, কী আছে সেখানে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ইরানের নাতানজ পরমাণু কেন্দ্র। ছবিটি ২০২১ সালে তোলা। ছবি: প্ল্যানেট ল্যাবস

সব জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দিয়ে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে জড়ালই যুক্তরাষ্ট্র। আজ রোববার মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় সময় ভোরে ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্র—ফোরদো, নাতানজ ও ইস্পাহানে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই স্থাপনাগুলোতে গত শুক্রবার ইসরায়েলও হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু এই কেন্দ্রগুলোর ওপরই কেন ইসরায়েল ও তার মিত্রদের নজর? কী এমন আছে এই তিন কেন্দ্রে?

নাতানজ

ইরানের সবচেয়ে বড় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজ। এর অবস্থান রাজধানী তেহরান থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য প্রয়োজনীয় সেন্ট্রিফিউজ তৈরির পাশাপাশি সেগুলোর সংযোজন ও উন্নয়নও হয় নাতানজে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইরানের পরমাণু কর্মসূচির একটি মূল কারিগরি ঘাঁটি, কারণ ইউরেনিয়ামকে পারমাণবিক জ্বালানিতে রূপান্তরের জন্য সেন্ট্রিফিউজ প্রযুক্তিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা নিউক্লিয়ার থ্রেট ইনিশিয়েটিভের (এনটিআই) তথ্য অনুযায়ী, নাতানজ স্থাপনায় ছয়টি ভূপৃষ্ঠস্থ ভবন এবং তিনটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনা রয়েছে, যার মধ্যে দুটি স্থাপনার ৫০ হাজার সেন্ট্রিফিউজ রাখার সক্ষমতা আছে। ২০০৩ সালে সচল করা হয় নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্র। এই কেন্দ্রেই ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছিল বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা-আইএইএ। উল্লেখ্য, অস্ত্র তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়ামকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ হতে হয়।

মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি—যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় নাতানজের ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলোও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের ভাষ্য—যেহেতু স্থাপনাটির বড় অংশই ভূগর্ভস্থ, তাই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করাই ভূগর্ভস্থ যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের ওপর প্রভাব ফেলতে সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

ইরানের প্রধান তিন পারমাণবিক কেন্দ্র হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: এএফপি

ফোরদো

ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক কেন্দ্র মনে করা হয় ফোরদোকে। এই পারমাণবিক কেন্দ্র সম্পর্কে অনেক তথ্য এখনো অজানা। এটি কওম নামের একটি শহরের কাছাকাছি অবস্থিত। পাহাড়ের গভীরে নির্মিত একটি সুরক্ষিত ও গোপন স্থাপনা আছে এখানে।

ফোরদো সম্পর্কে বর্তমানে যে তথ্যগুলো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়, সেগুলো মূলত ইসরায়েলের চুরি করা তথ্য। কয়েক বছর আগে ইসরায়েলি গোয়েন্দারা ইরান থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরি করেছিল, সেখানেই ফোরদো সম্পর্কিত সামান্য কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। ওইসব নথি অনুযায়ী, কেন্দ্রটির মূল কক্ষগুলো মাটি থেকে ৮০ থেকে ৯০ মিটার গভীরে অবস্থিত। যে কারণে ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংস করা বেশ কঠিন। একে ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করতে যে ধরনের বোমা বা অস্ত্র প্রয়োজন, তা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওইসব শক্তিশালী বোমাও ফোরদোকে ধ্বংস করতে যথেষ্ট নয়।

গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটির তথ্যমতে, ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে ইরানের ভান্ডারে থাকা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ২৩৩ কেজি অস্ত্র উৎপাদনের উপযোগী ইউরেনিয়ামে পরিণত করতে পারবে। যা নয়টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য যথেষ্ট। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইরান ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞ ও আইএইএর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ফোরদো স্থাপনাটিতে ২ হাজার ৭০০টি সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে।

ইরানের প্রধান তিন পারমাণবিক কেন্দ্র হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: এএফপি

ইস্পাহান

ইরানের কেন্দ্রে অবস্থিত ইস্পাহান পারমাণবিক কেন্দ্র। এটি ইরানের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র। চীনের সহায়তায় তৈরি হওয়া এই কেন্দ্র সচল হয় ১৯৮৪ সালে। এনটিআইয়ের তথ্যমতে, ইস্পাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে কর্মরত আছেন তিন হাজার বিজ্ঞানী। ইরানের সমগ্র পারমাণবিক কর্মসূচির প্রাণকেন্দ্র বলে মনে করা হয়ে থাকে এটিকে।

এই কেন্দ্রে চীনের সরবরাহ করা তিনটি ছোট গবেষণা চুল্লি চালু রয়েছে। সেই সঙ্গে এখানে একটি কনভারশন ফ্যাসিলিটি (পরিবর্তন কেন্দ্র), একটি জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্র, একটি জিরকোনিয়াম ক্ল্যাডিং কারখানা এবং আরও কিছু প্রযুক্তি স্থাপনা ও গবেষণাগার রয়েছে বলে জানিয়েছে এনটিআই।

নামাজরত ফিলিস্তিনির ওপর গাড়ি চালিয়ে দিলেন ইসরায়েলি সেনা

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

৭ অক্টোবরের দায় এড়াতে ফন্দি খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু: সাবেক মুখপাত্র

মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন শেখ ফয়সাল নোমান আর নেই

ইসরায়েল আর ‘কখনোই গাজা ত্যাগ করবে না’

তুরস্কে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে লিবিয়ার ‘জাতীয় ঐক্যের সরকারের’ সেনাপ্রধান নিহত

গাজায় ৭৩ দিনে ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের শিকার ৪১১ ফিলিস্তিনি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ৮৭৫ বার

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার