তেহরানের বিখ্যাত আজাদি স্কয়ারে গতকাল বুধবার বিনা মূল্যের একটি কনসার্ট পরিবেশন করেছে তেহরান সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা। আয়োজনটি ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক ১২ দিনের সংঘর্ষে নিহত ইরানিদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনতার সামনে অর্কেস্ট্রা পরিবেশন করে ‘অ্যাই ইরান’—যা ইরানের অনানুষ্ঠানিক জাতীয় সংগীত হিসেবে পরিচিত। এটি বহু বছর ধরে দেশপ্রেম ও প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। একসময় গানটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র সরকারের বিরোধিতা করার অভিযোগে নিষিদ্ধও ছিল।
১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত তেহরান সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা একাধিক সরকার পরিবর্তন, সামরিক অভ্যুত্থান, বিপ্লব ও যুদ্ধের মধ্য দিয়ে টিকে আছে এবং বর্তমানে এটিকে ইরানি সংস্কৃতির দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।
এই অর্কেস্ট্রার সবচেয়ে সংকটময় সময়টি ছিল কঠোরপন্থী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের শাসনামলে। সে সময় অর্থনৈতিক অবরোধ, আর্থিক সংকট ও অবহেলার কারণে এটি কার্যত বিলুপ্ত হয়ে যায়। পরে সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে অর্কেস্ট্রাটি পুনরায় চালু করা হয়।
ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষ চলাকালে থিয়েটার, সিনেমা ও কনসার্ট হলগুলো বন্ধ ছিল। তবে জনগণের মনোবল বাড়াতে সরকার এখন রাস্তায় সংগীত পরিবেশন, কবিতা পাঠের মতো সাংস্কৃতিক আয়োজনে উৎসাহিত করছে।
সরকার রাজধানীজুড়ে বিনা মূল্যের কনসার্ট ও পরিবেশনার ঘোষণা দিয়েছে এবং সিনেমা ও নাটকের টিকিটে অর্ধেক মূল্য চালু করেছে। এ ছাড়া আবারও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।