ওমান উপসাগরে ইরানের আঞ্চলিক জলসীমার দিকে এগিয়ে আসায় মার্কিন নৌবাহিনীর একটি ডেস্ট্রয়ারের মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল ইরানি সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার। এ সময় মার্কিন যুদ্ধজাহাজটিকে পথ পরিবর্তনের হুমকি দেয় ইরান। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এই ঘটনা ছিল পুরোপুরি ‘পেশাদার’ এবং এর কোনো প্রভাব তাদের সামরিক অভিযানে পড়েনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল বুধবার এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। গত জুনে ইরান-ইসরায়েল ১২ দিনের যুদ্ধের পর এটাই ছিল ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর মধ্যে প্রথম সরাসরি মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, ইউএসএস ফিটজেরাল্ড নামের যুক্তরাষ্ট্রের গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ারকে বাধা দিতে একটি হেলিকপ্টার পাঠায় ইরান।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ফিটজেরাল্ড ইরানের জলসীমার দিকে উসকানিমূলকভাবে অগ্রসর হয়।’ প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, একটি হেলিকপ্টার যুদ্ধজাহাজটির খুব কাছে উড়ছে এবং ইরানি এক সদস্য ইংরেজিতে রেডিও বার্তা দিয়ে জাহাজটিকে পথ পরিবর্তনের নির্দেশ দিচ্ছেন। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে জানানো হয়।
ইরানি গণমাধ্যম এই ঘটনাকে ‘চরম উত্তেজনাপূর্ণ’ বলেও উল্লেখ করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, যুদ্ধজাহাজটি ইরানকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, যদি হেলিকপ্টারটি এলাকা না ছাড়ে, তবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হবে অর্থাৎ হামলা করা হবে। তবে ইরানি সেনাবাহিনীর একাধিক সতর্কবার্তার পর যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজটি এলাকা ছেড়ে যায় বলে দাবি করা হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানিয়েছে, ঘটনাটি ছিল ‘নিরাপদ ও পেশাদার’ এবং সেখানে কোনো ধরনের উত্তেজনার ঘটনা ঘটেনি। রয়টার্সকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘এই ঘটনায় ইউএসএস ফিটজেরাল্ডের মিশনে কোনো প্রভাব পড়েনি। ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী যা বলছে, তা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিকর প্রচার।’
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনাটি পুরোপুরি আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঘটেছে এবং ইরান যে হেলিকপ্টারটি পাঠিয়েছিল, তা ছিল একটি এসএইচ-থ্রি ‘সি কিং’ হেলিকপ্টার।