ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল। সেই প্রস্তাব তারা ওয়াশিংটনকে জানিয়েছিলও। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বার্তা সংস্থা এপি এবং রয়টার্স দুইজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবশ্য এ খবর সত্য নয় বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
ইরান তার শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা এবং বিজ্ঞানীদের হারিয়ে ইসরায়েল আক্রমণ যখন তীব্র করেছে, সেই সময় এমন বিস্ফোরক তথ্য সামনে এল।
কিন্তু এই সময়ই কেন এমন সংবেদনশীল একটি খবর ছড়ানো হলো? এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয় মার্কিন কর্মকর্তারা কেন ফাঁস করলেন? ঠিক কী কী কারণ থাকতে পারে এর পেছনে? খবরটি চাউর হওয়ার পর থেকেই এসব প্রশ্ন উঠছে।
সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিক ও লেখক অ্যালন পিঙ্কাসের সঙ্গে এ ইস্যুতে কথা বলেছে কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। তিনি বলেন, এমন সময়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার এই আলোচনা সামনে আনায় বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। প্রথমত ইসরায়েল যদি এমন পরিকল্পনা করেও থাকে, তারা কেন যুক্তরাষ্ট্রকে জানাল? দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র কেন বিষয়টি ফাঁস করল?
আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, এর পেছনে নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। প্রথম উদ্দেশ্যই হলো, ইরানকে ভয় দেখানো। তাদের কাছে একটি বার্তা দেওয়া যে—কোনো পদক্ষেপই ইসরায়েলের বিবেচনার বাইরে নয়—তা সে যত বিধ্বংসীই হোক। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিজের ভাবমূর্তিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে হয়তো। তাঁর ভাষ্য—যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ববাসীকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, তারা আসলে সংযম চাচ্ছে এবং ইসরায়েলকেও সংযম দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না তথ্যটি ফাঁস করার পেছনে এর চেয়ে বেশি কিছু আসলে থাকতে পারে।’
অ্যালন পিঙ্কাসের মতে, এই খবর ইরানকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—ইসরায়েল এমন একটি হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে।
সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, ইসরায়েলে বিষয়টি যেভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, তা হলো—ইসরায়েল এই পদক্ষেপ নিয়ে সত্যিই চিন্তা করছে। তারা ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছে, এবং সেখান থেকে সাড়া এসেছে—‘এখন নয়’। অর্থাৎ, ইরানের কাছে একটি পরিষ্কার বার্তা পাঠানো হলো যে, ইসরায়েলের ভাবনায় এমন হামলার পরিকল্পনাও রয়েছে।