ইসরায়েলি হামলায় ইরানের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু হওয়ায় দেশটির অর্থনীতি আরও বিপর্যস্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন আন্তর্জাতিক তেল ও জ্বালানি বিশ্লেষক মানোচেহর তাকিন।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসরায়েল আত্মরক্ষার অজুহাতে ইরানের পারমাণবিক হুমকিকে অতিরঞ্জিত করেছে এবং এখন তারা ইরানের অর্থনীতি পঙ্গু করার উদ্দেশ্যে জ্বালানি খাতকে টার্গেট করছে।
তাকিন বলেন, দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্র মূলত ইরানের অভ্যন্তরীণ গ্যাস চাহিদা পূরণ করে। এই স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালালে শুধু রপ্তানি নয়, বরং দেশীয় গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থাও ধসে পড়বে, যার প্রভাব পড়বে গৃহস্থালি ও শিল্প খাতে।
তিনি আরও বলেন, এটা স্পষ্টভাবে ইরানের অর্থনীতিকে ভেঙে ফেলার কৌশল।
বিশ্লেষক তাকিন উল্লেখ করেন, ইরানের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি এবং জ্বালানি খাত ইতিমধ্যেই দুর্বল। যুদ্ধ নয়, বরং দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং বহুবছরের নিষেধাজ্ঞার ফলে গ্যাস সরবরাহ সংকটে রয়েছে ইরান।
তার ভাষায়, বিদেশি প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশের অভাবে পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন এসব স্থাপনায় হামলা ইরানকে আরও গভীর সংকটে ঠেলে দেবে।
গত কয়েক দিনে ইসরায়েল দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রসহ ইরানের পরমাণু, সামরিক এবং জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে। ইরানের তেল মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, দক্ষিণ পার্সের ফেজ-১৪ ইউনিটে বিস্ফোরণের ফলে দৈনিক ১২ মিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।
এটি ইরানের গ্যাস উৎপাদনের প্রায় ৭০ শতাংশের উৎস, এবং এ খাত থেকে দেশটি বিপুল অর্থ উপার্জন করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলাগুলো ইরানের শুধু সামরিক শক্তিকেই নয়, বরং অর্থনৈতিক ভিত্তিকেও দুর্বল করে দিচ্ছে। আর এই ধরনের কৌশলিক লক্ষ্যবস্তু নির্বাচন যুদ্ধকে আরও দীর্ঘস্থায়ী ও বিপজ্জনক করে তুলছে।