হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

মতাদর্শিকভাবে হামাস একগুঁয়ে নয়, সংলাপে সংকট সমাধান সম্ভব: ট্রাম্পের দূত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত ও তাঁর বন্ধু স্টিভ উইটকফ। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ শুক্রবার বলেছেন, তিনি মনে করেন, হামাস ‘মতাদর্শিক দিক থেকে একগুঁয়ে নয়’। এবং সংলাপের মাধ্যমে এই সংকট সমাধান সম্ভব। তবে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘ভালো উদ্দেশ্য’ নিয়ে কাজ করছেন এবং তিনি এমন এক পরিস্থিতিতে কাজ করছেন, যেখানে ইসরায়েলি জনমত হামাসকে ধ্বংস করার চেয়ে গাজায় আটক অবশিষ্ট বন্দীদের মুক্ত করার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেওয়া দেড় ঘণ্টার সাক্ষাৎকারে উইটকফ এই অবস্থান ব্যক্ত করেন। সাক্ষাৎকারে তিনি ইসরায়েল, হামাস ও কাতারের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি কাতারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে দেশটির পক্ষে জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন এবং গাজা যুদ্ধের কারণে মিসর ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলোতে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল-শারার এ বিষয়ে বলেন, আল-কায়েদার সদস্য হিসেবে তাঁর অতীত থাকলেও তিনি বদলে যেতে পারেন।

এ ছাড়া, উইটকফ গত জানুয়ারিতে সফলভাবে গাজা যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মধ্যস্থতা করেছিলেন, তার নতুন কিছু বিস্তারিত তথ্য জানান এবং জোর দিয়ে বলেন, ইরানের পারমাণবিক সংকট কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা সম্ভব। সাক্ষাৎকারের শুরুতে উইটকফ বলেন, তাঁর কাজ হলো তিনি যেসব পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তাঁদের উদ্দেশ্য বোঝা।

উইটকফ বলেন, ‘আমি মনে করি তারা (হামাস) সেখানে (গাজা) চিরকাল থাকতে চায়, গাজার শাসনক্ষমতা ধরে রাখতে চায়, যা আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। আমাদের বুঝতে হবে যে, তারা কী চায়। তাদের চাওয়াটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘যা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য তা হলো, তারা নিরস্ত্র হবে। তারপর হয়তো তারা কিছুটা রাজনৈতিকভাবে জড়িত থাকতে পারে...কিন্তু আমরা সশস্ত্র গোষ্ঠীকে গাজা পরিচালনা করতে দিতে পারি না। কারণ, এটি ইসরায়েলের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না। তাহলে প্রতি পাঁচ, ১০ বা ১৫ বছর পর আবারও আমরা ৭ অক্টোবরের মতো ঘটনা দেখতে পাব।’

হামাসের সঙ্গে আলোচনার অভিজ্ঞতা নিয়ে জানতে চাইলে উইটকফ স্বীকার করেন, তিনি সরাসরি তাদের সঙ্গে কথা বলেন না, বরং কাতারের মাধ্যমে মধ্যস্থতা করেন। তবে তিনি অনুমোদন দিয়েছিলেন, যাতে ট্রাম্পের বন্দিমুক্তিবিষয়ক দূত অ্যাডাম বোহলার এ বছরের শুরুতে গোপনে হামাস নেতাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেন। কিন্তু ইসরায়েল বিষয়টি ফাঁস করার পর যুক্তরাষ্ট্র ওই আলোচনা থেকে সরে আসে।

উইটকফ বলেন, তিনি হামাসের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করেছেন এবং তাদের ৭ অক্টোবরের হামলার নৃশংস ফুটেজ দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘সেখানে গণধর্ষণের ঘটনা ছিল। আমি এমন দৃশ্য দেখেছি, যেখানে হামাস যোদ্ধারা একজন ইসরায়েলি সেনার মাথা কেটে ফেলছে...এটি এমন কিছু, যা আমি আগে কখনো দেখিনি।’

তিনি বলেন, ‘এটি আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করতে পারে। একজন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কখনো কখনো আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন। তবে আমি এটি দেখতে চেয়েছি, কারণ ৭ অক্টোবরের ঘটনা উপেক্ষা করা যাবে না।’ তবে তিনি আবারও হামাসের উদ্দেশ্য বোঝার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘আপনাকে জানতে হবে হামাস কী চায়, তারপর তাদের এমন কিছু দিতে হবে, যাতে তারা বেরিয়ে আসতে রাজি হয়, কারণ সেটাই এখানে দরকার।’

ট্রাম্পের এই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আরও বলেন, ‘শুরুতে বলা হয়েছিল যে হামাস মতাদর্শিকভাবে অনড় এবং তারা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তারা ততটা আদর্শবাদী নয়। তারা শিশুদের আত্মঘাতী বোমা পরিয়ে পাঠায়, যারা বোঝেই না তারা কী করছে। তাদের মিথ্যা গল্প শোনানো হয়।’ উইটকফ বলেন, ‘আমি অনেক মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন পড়েছি এবং আলোচনার ধরন বিশ্লেষণ করে বুঝতে পেরেছি, তারা বিকল্প চায়।’

উইটকফ বলেন, হামাসকে রাজি করানোর জন্য তিনি একটি মধ্যবর্তী প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যাতে পাসওভার পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বাড়ানো এবং পাঁচজন জীবিত বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে হামাস এটি প্রত্যাখ্যান করে। হামাস জানায়, তারা জানুয়ারিতে হওয়া চুক্তির মূল শর্তগুলোর বাইরে কিছুতে রাজি হবে না, যেখানে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু ইসরায়েল ওই আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে। কারণ, এতে তাদের সেনা প্রত্যাহার ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্ত ছিল। হামাসের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকায় ইসরায়েল গত সপ্তাহে গাজায় ফের বিমান হামলা শুরু করে। নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘হামাস বারবার বন্দিমুক্তি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়’ ইসরায়েল এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে। তবে উইটকফ এখনো আশা করছেন যে, যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধার সম্ভব। তিনি বলেন, ‘এর কিছু লক্ষণ আছে।’ তিনি জানান, ‘আমরা এখনো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে ইসরায়েলি হামলা কিছুটা কমানো যায় এবং আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের ইতি টানা সম্ভব হয়।’

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

৭ অক্টোবরের দায় এড়াতে ফন্দি খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু: সাবেক মুখপাত্র

মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন শেখ ফয়সাল নোমান আর নেই

ইসরায়েল আর ‘কখনোই গাজা ত্যাগ করবে না’

তুরস্কে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে লিবিয়ার ‘জাতীয় ঐক্যের সরকারের’ সেনাপ্রধান নিহত

গাজায় ৭৩ দিনে ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের শিকার ৪১১ ফিলিস্তিনি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ৮৭৫ বার

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র