ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি দেশটির তেল খাতে দুর্নীতি ও চোরাচালানের অভিযোগে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, ইরানি অপরিশোধিত তেলকে ইরাকি তেলের সঙ্গে মিশিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরনের শিথিলতা দেখানো হবে না বলেও সতর্ক করেন তিনি।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) আমিরাতভিত্তিক ‘দ্য ন্যাশনাল’ জানিয়েছে, ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে। সম্প্রতি ওয়াশিংটন দুই ইরাকি ব্যবসায়ীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ইরানি তেলকে ইরাকি তেল হিসেবে চালান দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করছিলেন।
ইরাকের রাষ্ট্রীয় তেল বিপণন সংস্থা ‘সোমো’র প্রধান আলি নাজার আল শাতারি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাঁদের উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ চলছে এবং তথ্য আদান-প্রদান ইতিবাচক।
শাতারি আরও জানান, তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা ‘সোমো’ কোনো ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত নয় এবং দেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় তেল মিশ্রণ বা পাচারের সুযোগ নেই। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মূলত ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু কোম্পানি ও জাহাজের বিরুদ্ধে। এগুলো ইরাকের সরকারি রপ্তানির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক ইরাকি ব্যবসায়ী পরিচালিত কয়েকটি কোম্পানি ও জাহাজের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইরানি তেলকে ইরাকি হিসেবে দেখিয়ে পাচার করা হয়েছে। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী মুখপাত্র থমাস পিগট জানান, ইরানের ‘ধ্বংসাত্মক ও অস্থিতিশীল কার্যক্রম’ ঠেকাতে তেলের রাজস্বপ্রবাহ বন্ধে ওয়াশিংটন কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।
পিগট আরও জানান, ইরানের অবৈধ তেল-বাণিজ্যে যারা সহযোগিতা করছে, তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের কৌশল প্রয়োগ করবে। এর আগেও গত জুলাইয়ে আরও এক ইরাকি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ কৌশলেরই অংশ। এর মাধ্যমে তেহরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ছাড় দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন।