ভারতের রাজস্থান রাজ্যের ভিলওয়াড়ায় ১৯ দিনের এক নবজাতককে জঙ্গলে ফেলে যাওয়ার ঘটনায় নতুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভয়াবহ এই ঘটনার পর শিশুটির মা এবং নানাকে আটক করেছে পুলিশ। দুই দিন আগে ভিলওয়াড়ার মাণ্ডলগড় এলাকার জঙ্গলে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। তখন তার ঠোঁটে আঠা লাগানো ছিল, আর মুখের ভেতরে একটি পাথর ঢোকানো ছিল। অভিযোগ, যাতে শিশুটি কাঁদতে না পারে এবং আশপাশের লোকজনের সন্দেহ না হয়, সে জন্যই এভাবে তাকে নির্যাতন করা হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুটি এক নারীর অবৈধ সম্পর্কের ফল। সমাজের চোখে লজ্জা এড়াতে সেই নারী ও তার বাবা ভুয়া পরিচয়ে বুন্দি শহরে একটি ঘর ভাড়া নেন। সেখানেই গোপনে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পর প্রথমে নবজাতককে বিক্রি করার চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু পরিকল্পনা সফল না হওয়ায় কয়েক সপ্তাহ পর শিশুটিকে জঙ্গলে ফেলে দেন।
ভিলওয়াড়া জেলার পুলিশ সুপার ধর্মেন্দ্র সিং যাদব বলেন, ‘তথ্য পেয়ে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তার এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক থেকেই সন্তানের জন্ম। পরে তিনি শিশুটিকে ফেলে দেন।’ পুলিশ আরও জানিয়েছে, শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
শিশুটিকে প্রথমে দেখতে পান এক রাখাল। তিনি ছাগল চরাতে গিয়ে ক্ষীণ কান্নার শব্দ শুনে খোঁজ নিতে যান। তখনই তিনি শিশুটিকে খুঁজে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও গ্রামবাসীদের খবর দেন। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে মহাত্মা গান্ধী হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তাকে নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটি এখনো সংকটজনক অবস্থায় আছে। তবে ধীরে ধীরে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। ভিলওয়াড়া মেডিকেল কলেজের মা ও শিশু বিভাগের ইনচার্জ ডা. ইন্দ্র সিং এনডিটিভিকে বলেন, ‘শিশুটি শ্বাসকষ্টে ভুগছে বলে তাকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে। গরম পাথরের সংস্পর্শে আসায় তার শরীরে পোড়ার ক্ষতও হয়েছে।’
স্থানীয় মানুষজনের মতে, এ ধরনের ঘটনা সমাজের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ। পুলিশ শিশুটির মা ও নানাকে আটক করলেও পুরো ঘটনায় আর কে কে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।