ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সাবেক এমপি কুমার কেতকার দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয়ের ছক কষেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সংবিধান দিবস উপলক্ষে কংগ্রেস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে একসময় সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা কেতকার বলেন, ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ১৪৫টি আসন পেয়েছিল এবং পাঁচ বছর পরের সাধারণ নির্বাচনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০৬-এ।
চলতি ধারা ধরে হিসাব করলে ২০১৪ সালে কংগ্রেসের কমপক্ষে ২৫০টি আসন পাওয়ার কথা ছিল, সহজে ক্ষমতায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু হলো উল্টো। দলের আসনসংখ্যা নেমে গেল মাত্র ৪৪-এ।
তিনি বলেন, ‘সেখান থেকেই খেলার শুরু। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যেকোনো পরিস্থিতিতেই কংগ্রেসের আসন যেন ২০৬-এর ওপরে না ওঠে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে।’ তিনি বলেন, ‘কিছু সংস্থা এমনভাবে কাজ করছিল যে যতক্ষণ না আমরা কংগ্রেসকে ২০৬ থেকে নামাতে পারছি, ততক্ষণ ভারতে নিজেদের খেলা চালানো যাবে না। এই সংস্থাগুলোর একটি ছিল সিআইএ, আরেকটি ইসরায়েলের মোসাদ।’
কেতকারের দাবি, এই দুই সংস্থা ঠিক করেছিল যে ভারতে তাদের কিছু করতেই হবে। কারণ, আবার যদি একটি স্থিতিশীল কংগ্রেস সরকার বা কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতায় ফিরে আসে, তাহলে তারা ভারতের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, নিজেদের নীতিও চাপিয়ে দিতে পারবে না।
তিনি জানান, এই দুই গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা ছিল—দিল্লিতে এমন একটি সরকার আসা দরকার, যা তাদের জন্য সুবিধাজনক হবে, তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দরকার একটা সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার, কিন্তু তা যেন কংগ্রেস না হয়।
কেতকার দাবি করেন, ‘মোসাদ রাজ্যভিত্তিক এবং কেন্দ্রীয় আসনভিত্তিক বিস্তারিত তথ্য প্রস্তুত করেছিল। সিআইএ ও মোসাদের হাতে ভারতের রাজ্য আর আসনভিত্তিক বিশদ ডাটাবেইস আছে।’
কেতকার বলেন, ২০১৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রতি অসন্তোষ ছিল, খেদ ছিল; তবে তা ২০৬ থেকে কংগ্রেসকে নামিয়ে ৪৪-এ নামানোর মতো ছিল না।
দলের কাছে তখন বিরোধীদলীয় নেতার পদ দাবি করার মতো সংখ্যাও ছিল না। তাঁর ভাষায়, ‘এটা জনগণের রায় ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর বহুদিনের ইচ্ছা ছিল বলকান অঞ্চলের দেশগুলোর মতো যেন ভারতও ভেঙে যায়।