ফেন্টানিল নামক একধরনের সিনথেটিক মাদকের উপাদান পাচারে জড়িত ভারতীয় ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নতুন করে ভিসার আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। মার্কিন দূতাবাসের বরাতে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
বিবৃতিতে কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের অযোগ্য হবেন। এ ছাড়া ফেন্টানিলের উপাদান পাচারের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব ভিসার জন্য আবেদন করলে তা মার্কিন কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত করবে।
দূতাবাস জানায়, মার্কিন সরকার মাদক পাচার মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে মাদক উৎপাদন ও পাচারে জড়িত, তারা ও তাদের পরিবার ফল ভোগ করবে, যার মধ্যে ভিসা প্রত্যাখ্যান অন্যতম।
এ ছাড়া মার্কিন দূতাবাস ভারত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে জানায়, ‘এই যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা কৃতজ্ঞ। শুধু একসঙ্গে কাজ করলেই দুই দেশের জনগণকে অবৈধ মাদকের হুমকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব।’
ফেন্টানিল একটি কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত ওপিওইড, যা হেরোইনের চেয়ে ৫০ গুণ শক্তিশালী। মাত্র দুই মিলিগ্রাম গ্রহণ করলেই এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ফেন্টানিল-সম্পর্কিত মাদকের কারণে ৪৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত।
১৯৬০-এর দশকে ব্যথানাশক হিসেবে চিকিৎসায় অনুমোদন পায় ফেন্টানিল। তবে পরবর্তী সময়ে এটি সবচেয়ে প্রাণঘাতী মাদক হিসেবে পরিচিতি পায়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, ফেন্টানিল পাচারের মূল উৎস চীন। তারা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া অধিকাংশ ফেন্টানিল এবং এর উপাদান চীন থেকেই আসে।
পরে ফেব্রুয়ারি মাসেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ এবং মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল ফেন্টানিল পাচার বন্ধ করা। পরে চীন-আমেরিকার বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র হলে শুল্ক আরও বাড়ানো হয়।