অবৈধ পথে প্রবেশের অভিযোগে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ৫৪ জন নাগরিককে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রোববার দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩-এ অবতরণ করে তাঁদের বহনকারী ওএই-৪৭৬৭ ফ্লাইটটি।
ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় এসব তরুণ ‘ডানকি রুট’ নামে পরিচিত অবৈধ পথ ব্যবহার করেছিলেন। এই রুটের মাধ্যমে দালাল চক্র ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ ঘুরিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচার করে।
পুলিশ জানায়, ফেরত আসা ৫৪ জনের মধ্যে ১৬ জন করনাল জেলার, ১৫ জন কাইথালের, পাঁচজন আম্বালার, চারজন যমুনানগরের, চারজন কুরুক্ষেত্রের, তিনজন জিন্দের, দুজন সোনিপাতের এবং একজন করে পঞ্চকুলা, পানিপথ, রোহতক ও ফতেহাবাদ জেলার।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেরত পাঠানো নাগরিকদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। করনাল পুলিশ জানিয়েছে, কোনো দালালের বিরুদ্ধে এখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ফেরত আসা ব্যক্তিদের তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
করনাল জেলার উপপুলিশ সুপার (ডিএসপি) সন্দীপ কুমার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও কয়েকজন ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ৫০ জন হরিয়ানার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে করনাল জেলার প্রায় ১৬ জন। এই ব্যক্তিরা ডানকি রুট ব্যবহার করে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। আমরা তাঁদের ফিরিয়ে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। কোনো দালালের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবে তদন্ত চলছে। কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন কি না, তা তদন্তে জানা যাবে।’
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনা বেড়েছে। চলতি বছরই যুক্তরাষ্ট্র শত শত ভারতীয় নাগরিককে অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগে ফেরত পাঠিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে, যাঁরা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া দেশটিতে অবস্থান করেন বা অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করেন, তাঁদের সবাইকে ফেরত পাঠানো হবে।
২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার ৭৫৬ ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ছিল ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪২ জন এবং ২০২০ সালে ১ হাজার ৮৮৯ জন। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল থেকে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।