ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) নিশ্চিত করেছে, দিল্লির লালকেল্লার বিস্ফোরণ ছিল একটি আত্মঘাতী হামলা। এনআইএ জানিয়েছে, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন আত্মঘাতী হামলাকারী উমর উন নবী। তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল বলে জানিয়েছে এনআইএ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এনআইএর বরাতে জানিয়েছে, আমির রশিদ আলী নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে মিলে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন উমর উন নবী। গত সোমবারের ওই হামলায় ব্যবহৃত গাড়িটি আমিরের নামেই রেজিস্টার্ড ছিল। তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্বুরা, পাম্পোর এলাকার বাসিন্দা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গাড়ি কেনার কাজে সাহায্য করতে আমির দিল্লিতে এসেছিলেন এবং পরে সেই গাড়িকেই আইইডিতে (গাড়িবোমা) রূপান্তর করা হয়।
ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে, বিস্ফোরণে নিহত গাড়িচালকই ছিলেন উমর উন নবী। তিনি ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনারেল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার বাসিন্দা। এনআইএ নবীর আরও একটি গাড়ি জব্দ করেছে, যা এখন তদন্তাধীন।
এদিকে এনআইএ আজ রোববার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে জানিয়েছে, গ্রেপ্তার চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট সংযোগ না পাওয়ায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন চিকিৎসক রেহান, মোহাম্মদ, মুস্তাকিম ও সার বিক্রেতা দিনেশ সিংলা। সম্প্রতি তাঁদের হরিয়ানার নুহ এলাকা থেকে আটক করা হয়েছিল।
তাঁদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসকই আগে উমর উন নবীর সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন এবং আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানের নাম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় এসেছে।
এনআইএ এ পর্যন্ত ৭৩ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছে, এর মধ্যে আহত ব্যক্তিরাও রয়েছেন। তদন্ত চলছে দিল্লি পুলিশ, জম্মু–কাশ্মীর পুলিশ, হরিয়ানা পুলিশ, উত্তর প্রদেশ পুলিশসহ একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সংস্থার সমন্বয়ে। বিস্ফোরণের পেছনে আরও বড় কোনো চক্র রয়েছে কি না, কারা কারা যুক্ত—এসব জানতেই তদন্ত এখন একাধিক রাজ্যে সমান্তরালভাবে এগোচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে ধীরগতিতে চলতে থাকা একটি হুন্ডাই আই-২০ গাড়ি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হন।