হোম > বিশ্ব > ভারত

ভারতের মিরাটে ‘ন্যুড গ্যাং’ আতঙ্ক, প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

কলকাতা প্রতিনিধি  

ন্যুড গ্যাং আতঙ্কে গ্রামের মানুষ। ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি করছে প্রশাসন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মিরাটে এখন থমথমে পরিবেশ। দাউরালা, ভারালাসহ বিভিন্ন গ্রামে ‘ন্যুড গ্যাং’ নামে এক অদ্ভুত ও চাঞ্চল্যকর গোষ্ঠীর আতঙ্কে ভুগছে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নারীরা। এই গোষ্ঠীর সদস্যরা আচমকা নগ্ন অবস্থায় জনসমক্ষে এসে সুযোগ বুঝে একা থাকা নারীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে নির্জন স্থানে।

এখন পর্যন্ত পুলিশের কাছে চারটি ঘটনার লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লোকলজ্জার ভয়ে এর আগে অনেকেই এ ধরনের ঘটনা গোপন করে গেছেন। ফলে গ্রামীণ সমাজে আতঙ্ক এখন চরমে।

ভারালার এক নারীর অভিজ্ঞতা সবচেয়ে ভয়াবহ। তিনি একা কাজে যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে দুজন নগ্ন দুষ্কৃতকারী তাঁকে ধরে ফাঁকা মাঠে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কোনোমতে তিনি ছুটে পালিয়ে যান। পরে গ্রামবাসীরা ছুটে এসে চারদিক ঘিরে ফেললেও দুষ্কৃতকারীদের ধরা যায়নি। এ ঘটনার পর থেকে ওই নারী তাঁর আগের কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। একা বাইরে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।

গ্রামবাসীরা আরও জানান, সামাজিক কলঙ্ক ও সম্মানের ভয়ে অনেকেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেননি। এতে দুষ্কৃতকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এখন প্রতিটি গ্রামে ভয় ছড়িয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার পর মেয়েরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না, এমনকি দিনের বেলায়ও তাঁদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে।

পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে। অপরাধীদের ধরতে ড্রোন ও সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এলাকায় টহলও জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও দুষ্কৃতকারীদের কোনো খোঁজ না পাওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ শুরুতে এই ঘটনাগুলোকে ছোট করে দেখেছে, যে কারণে আতঙ্ক এখন বড় আকার ধারণ করেছে।

দাউরালার প্রবীণ সমাজকর্মীরা এ ধরনের ঘটনাকে সমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁরা বলছেন, কেউ নগ্ন হয়ে প্রকাশ্যে এসে নারীদের ওপর হামলা চালাবে—এটা কল্পনারও বাইরে। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ ও সমাজ উভয়কেই এগিয়ে আসতে হবে।

‘ন্যুড গ্যাং’-এর কার্যকলাপকে অনেকে নিছক অপরাধের চেয়েও একধরনের মানসিক বিকৃতি হিসেবে দেখছেন। এই কৌশল শারীরিক আঘাতের পাশাপাশি মানসিক ট্রমাও সৃষ্টি করছে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, শুধু পাহারা বসিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না, বরং দ্রুত দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরি। এটি কেবল কিছু নারীর ওপর হামলা নয়, পুরো গ্রামের সামাজিক নিরাপত্তা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা।

বর্তমানে মিরাটের গ্রামগুলোতে সন্ধ্যা নামলেই নীরবতা নেমে আসে। মেয়েরা স্কুল বা বাজারে যেতে ভয় পাচ্ছে। গ্রামবাসীরা নিজেরাই পালা করে পাহারা দিচ্ছেন। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও স্থানীয় বাসিন্দারা ভরসা পাচ্ছেন না।

হাদির খুনিদের দুই সাহায্যকারীকে আটকের দাবি নাকচ করল মেঘালয় পুলিশ

ধর্ষণের শিকার নারীকে বিজেপি নেত্রীর স্বামী বললেন, ‘আমার কিছুই হবে না’

বেঙ্গালুরুতে ‘বুলডোজার রাজ’: ৪০০ মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ, তোপের মুখে কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিয়ে ফের উদ্বেগ জানাল ভারত

আতঙ্ক ও উত্তেজনার মধ্যে ভারতে বড়দিন ‘উদ্‌যাপন’

ওডিশায় পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম তরুণকে ‘বাংলাদেশি’ বলে পিটিয়ে হত্যা

‘বাংলাদেশি’ তকমায় এক বছরে ২২০০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারত

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

তাজমহল একসময় মন্দির ছিল—মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীর মন্তব্যে নতুন বিতর্ক

বড়দিন ঘিরে খ্রিষ্টানদের ওপর চড়াও ভারতের হিন্দুত্ববাদীরা, উত্তেজনা তুঙ্গে