রাজধানী দিল্লিতে সাম্প্রতিক ঘটা গাড়ি বিস্ফোরণকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। গত সোমবার শহরের ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে ওই বিস্ফোরণে অন্তত আটজন নিহত ও ২০ জন আহত হন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার গভীর রাতে (স্থানীয় সময়) নিরাপত্তাসংক্রান্ত এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভা এ হামলার নিন্দা করেছে। মন্ত্রিসভা বলেছে, এটি ‘ভারতবিরোধী শক্তিগুলো’ দ্বারা সংঘটিত একটি কাপুরুষোচিত কাজ।
তবে এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ এ বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কারও নাম প্রকাশ করেনি বা কাউকে গ্রেপ্তারও করেনি।
গতকালের বৈঠকে মন্ত্রিসভা বলেছে, ভারতবিরোধী শক্তি দ্বারা সংঘটিত এ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশ আরও একটি জঘন্য সন্ত্রাসী ঘটনার সাক্ষী হয়েছে। মন্ত্রিসভা নির্দেশ দিচ্ছে, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধী, তাদের সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করা হোক এবং অবিলম্বে তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
মন্ত্রিসভা আরও বলেছে, সরকার নির্দোষ মানুষের প্রাণহানির কারণ হওয়া এই জঘন্য ও কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা জানাচ্ছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের জিরো টলারেন্স নীতি সব সময় অটল থাকবে।
গত সোমবার দিল্লির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থান লালকেল্লার নিকটবর্তী একটি মেট্রো স্টেশনের কাছে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল।
দিল্লি পুলিশের কমিশনার সতীশ গোলচা সাংবাদিকদের জানান, সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের কাছে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। গাড়িটি ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে ছিল। এর ফলে কাছাকাছি থাকা গাড়িগুলোরও ক্ষতি হয়।
দিল্লি পুলিশের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, হুন্ডাই আই-২০ মডেলের একটি গাড়িতে এই বিস্ফোরণ ঘটেছিল। বিস্ফোরণের সময় গাড়িটি ধীরে ধীরে চলছিল এবং তাতে তিনজন আরোহী ছিলেন।
বিস্ফোরণের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দিল্লি পুলিশ আশপাশের এলাকায় হাই অ্যালার্ট বা উচ্চ সতর্কতা জারি করে।
সোমবার ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, পুলিশ, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিস্ফোরণের তদন্ত করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছি এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করব। তদন্তের ফলাফল আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরব।’
প্রধানমন্ত্রী মোদি বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত হৃদয়বিদারক’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, লালকেল্লা সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। ভারতের জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক এটি পরিদর্শনে আসেন। প্রতিবছর ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ এই স্থান থেকেই দিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী।