পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার নারী চিকিৎসকের বাবার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মানহানির মামলা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ; যা নিয়ে রাজ্যটিতে বেশ আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে।
আদালতের নোটিশে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় নিহত ওই নারী চিকিৎসকের বাবা বা আইনজীবীকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে কুণাল বলেন, ‘যেহেতু উনি বিভিন্ন সময়ে বিবৃতি দিয়েছেন এবং আদালতের বাইরে বিজেপিকে নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছেন, তাই আশা করছি, এবার নিজে হাজির হবেন।’
এর আগে ১১ আগস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল অভিযোগ করেন, নিহত নারীর বাবা ‘তাঁর নাম ব্যবহার করে ভিত্তিহীন’ অভিযোগ তুলেছেন।
পরদিন কুণাল আরও একটি পোস্টে জানান, আদালতে প্রমাণ দাখিল না করলে মামলা করা হবে। তিনি উল্লেখ করেন, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার নারীর বাবাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং চার দিনের মধ্যে জবাব না দিলে মামলা করা হবে।
ওই নারী চিকিৎসকের বাবা জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, যা আদালতে দাখিল করা হবে।
তিনি বলেন, ‘যেখানে আমাদের উপস্থিতির প্রয়োজন, সেখানে অবশ্যই যাব। ফালতু কাজে সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। আমরা কি ছেড়ে দেব?’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, কুণাল ঘোষের এ পদক্ষেপ শুধু এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা নয়, এটি রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন উত্তাপ যোগ করেছে। সরকারপক্ষ সমর্থন করলেও বিরোধীপক্ষের নেতারা এটিকে রাজনৈতিক চাপ ও হেয় প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে দেখছেন।
২০২৪ সালের ৯ আগস্ট কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ৩১ বছরের এক পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসককে।
এ ঘটনায় করা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় একমাত্র দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়কে গত ২০ জানুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। যদিও নিহত চিকিৎসকের মা-বাবার অভিযোগ, শুধু একজন ব্যক্তি এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারেন না। সিবিআইকে অন্য অপরাধীদেরও খুঁজে বের করতে হবে।
এ হত্যা ও ধর্ষণ মামলার পুনঃ তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হন নিহত ব্যক্তির মা-বাবা।