ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, বর্তমানে সিন্ধু প্রদেশ ভারতের অংশ না হলেও, সভ্যতাগত ঐতিহ্যের দিক থেকে এটি একসময় ভারতেরই অংশ ছিল। ১৯৪৭ সালে বিভাজনের পর সেটা পাকিস্তানে চলে যায়, ভবিষ্যতে সেই অঞ্চল আবারও ভারতে ফিরে আসতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ রোববার দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেছেন রাজনাথ সিং। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা আবারও উসকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রাজধানী দিল্লিতে আয়োজিত ‘সিন্ধি সমাজ সম্মেলনে’ রাজনাথ সিং বলেন, ‘সভ্যতার দিক থেকে সিন্ধু সব সময় ভারতেরই অংশ থাকবে। ভূরাজনৈতিক সীমান্ত কখনোই চূড়ান্ত বা স্থায়ী নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ সিন্ধুর ভূমি ভারতের অংশ না-ও হতে পারে, কিন্তু সভ্যতাগতভাবে সিন্ধু সব সময়ই ভারতের অংশ। আর ভূমির কথা বলতে গেলে—সীমান্ত বদলায়। কে জানে, কাল-পরশুই হয়তো সিন্ধু আবার ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।’
রাজনাথ সিং তাঁর বক্তব্যে বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা লালকৃষ্ণ আদবানির প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, বিভাজনের এত দশক পরও অনেক সিন্ধি হিন্দু সিন্ধুর বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি।
তিনি বলেন, ‘সারা ভারতের হিন্দুরা সিন্ধু নদকে পবিত্র মনে করে। সিন্ধুর বহু মুসলমানও বিশ্বাস করতেন সিন্ধুর পানি মক্কার জমজমের পানির মতোই পবিত্র—এটিও আদবানিজির লেখারই উদ্ধৃতি।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সিন্ধুর মানুষ আজ পৃথিবীর যেখানেই থাকুন না কেন, আপনারা সব সময় ভারতেরই মানুষ এবং ভারতেরই অংশ। মে মাসে যখন অপারেশন সিঁদুর চলছিল, তখন আমাদের উচিত ছিল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর দখল করে নেওয়া।’
তবে এমন ধারণা শুধু রাজনাথ সিংয়ের একার নয়। অপারেশন সিঁদুরের সময় অনেক ভারতীয়ই এমন মন্তব্য করেছিলেন। তাঁরা বলেন, ভারতের উচিত ছিল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের দিকে অগ্রসর হয়ে নিজেদের ভূখণ্ড পুনর্দখল করা।
তাই রাজনাথ সিংয়ের এমন বক্তব্য বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর এই বক্তব্য ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা আবারও উসকে দিতে পারে। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের কড়া প্রতিক্রিয়াও আনতে পারে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ একসময় ছিল ভারতের সিন্ধি জনগোষ্ঠীর (ইন্দো-আর্য জাতিগোষ্ঠী) আদি নিবাস। এখানেই গড়ে উঠেছিল প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা, যা ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।