ভারতে হায়দরাবাদ-বিজাপুর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও বহু যাত্রী। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার সকালে তেলেঙ্গানা রাজ্যের রাঙ্গারেড্ডি জেলায়।
তেলেঙ্গানা স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (টিএসআরটিসি)-এর একটি যাত্রীবাহী বাস তাণ্ডুর থেকে ভিকারাবাদ জেলা হয়ে হায়দরাবাদ অভিমুখে যাচ্ছিল। বাসটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা যায়। পথেই নির্মাণ সামগ্রী (নুড়িপাথর) বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
ট্রাকে বোঝাই করা নুড়িপাথর বাসের ভেতরে ছিটকে এসে পড়ে। নুড়ির স্তূপের নিচে চাপা পড়ে বহু যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান।
নিহতদের মধ্যে ১০ জন নারী, ১০ মাস বয়সী একটি শিশু এবং দুর্ঘটনা কবলিত দুই গাড়ির (বাস ও ট্রাক) চালকও রয়েছেন। বাসের চালকের আসন এবং ঠিক তাঁর পেছনের ছয়টি সারির যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এই অংশেই বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।
স্থানীয় পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। ধ্বংসস্তূপ এবং নুড়ির নিচে চাপা পড়া মানুষের আর্তচিৎকারে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। নুড়ির স্তূপ এবং বাসের ভেঙে যাওয়া কাঠামোর জন্য আহত ও মৃতদেহ উদ্ধারে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। পরে গাসকাটার দিয়ে বাসের অংশ কেটে অনেক মৃতদেহ উদ্ধার করতে হয়।
আহত যাত্রীদের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দুর্ঘটনার খবরে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিবহন মন্ত্রী পন্নম প্রভাকর এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ জানতে টিএসআরটিসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াই নাগিরেড্ডির সঙ্গে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি রাঙ্গারেড্ডি জেলার কালেক্টরকে আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তেলেঙ্গানার প্রধান বিরোধী দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-এর কার্যকরী সভাপতি কেটি রামা রাও এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি সরকারের কাছে নিহতদের পরিবারকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এই ভয়ানক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছেন।