ইউক্রেনে মঙ্গলবার রাতভর ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই হামলায় ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তেরনোপিলে একটি বহুতল আবাসিক ভবন লক্ষ্যবস্তু হলে অন্তত ১৯ জন নিহত ও ৬৬ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলায় ওই ভবনের ওপরের তলাটি ধসে পড়ে। পাশাপাশি ওই ভবন থেকে কালো ধোঁয়া ও কমলা আভা আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষের সন্ধান করছে।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাতে রাশিয়া ৪৭০ টির বেশি ড্রোন এবং ৪৮টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এসব হামলার লক্ষ্য ছিল জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো। এতে সাতটি অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিভিন্ন এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। তীব্র শীতের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তি বাড়ে সাধারণ মানুষের।
এই হামলার প্রেক্ষিতে ইউক্রেনের প্রতিবেশী ও ন্যাটো সদস্য দেশ পোল্যান্ডও সতর্ক অবস্থায় যায়। পোল্যান্ডের পশ্চিম সীমান্তের কাছের রেজশুভ ও লুবলিন বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি নিশ্চিত করেছেন, তেরনোপিলসহ কয়েকটি স্থানে বহুতল আবাসিক ভবন সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। আরও মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সমর্থকদের প্রতি রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে প্রতিটি বর্বরোচিত হামলা প্রমাণ করে—রাশিয়ার ওপর বর্তমান চাপ যথেষ্ট নয়। কার্যকর নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনকে আরও প্রতিরক্ষা সহায়তা এই পরিস্থিতি বদলাতে পারে।’
বুধবার সকালে ইউক্রেনের লভিভেও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন রয়টার্সের এক সাংবাদিক। রাজধানী কিয়েভের বাসিন্দারা হামলার সময় মেট্রো স্টেশনে আশ্রয় নেন।
সর্বশেষ এই হামলায় সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে দেশজুড়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।