সব সময় সুখী থাকার জন্য জটিল কোনো সূত্রের দরকার নেই। অন্তত ভ্যাটিকানের বক্তব্য তাই। গতকাল মঙ্গলবার ঘোষণা এল—ক্যাথলিকদের জন্য এক জীবনে একজন সঙ্গীই যথেষ্ট। তাঁদের মতে, একাধিক যৌন সম্পর্কে না জড়িয়ে, একজন জীবনসঙ্গী বেছে নিলেই সুখী হওয়া যায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নতুন এক ডিক্রি প্রকাশ করেছে ভ্যাটিকানের ডকট্রিনাল অফিস। পোপ লিও অনুমোদিত সেই নির্দেশনায় বিশ্বের ১৪০ কোটি ক্যাথলিককে বলা হয়েছে, জীবনে একজন সঙ্গীকেই বেছে নিতে হবে, একাধিক যৌন সম্পর্ক নয়।
আফ্রিকায় চার্চের সদস্যসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে বহুবিবাহের প্রচলনের কঠোর সমালোচনা করেছে ভ্যাটিকান। তারা আবারও জানিয়েছে, বিবাহ তাদের দৃষ্টিতে—একজন পুরুষ ও একজন নারীর আজীবন অঙ্গীকার। নির্দেশনাটিতে সমলিঙ্গ সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলা হয়নি। বরং ‘প্রচলিত বিবাহের সমৃদ্ধি ও সুফল এবং ফলপ্রসূ’ হওয়ার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ক্যাথলিকদের উচিত একজন সঙ্গী খুঁজে নিয়ে তার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া।
নতুন ডিক্রিতে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক প্রকৃত বিবাহ দুজন ব্যক্তির একক বন্ধন। সম্পর্কটি এত ঘনিষ্ঠ, এত সর্বব্যাপী যে অন্য কারও সঙ্গে তা ভাগ করা যায় না।’ তাতে আরও বলা হয়, ‘যেহেতু বিবাহ সমান মর্যাদা ও সমান অধিকারের দুই মানুষের মিলন, তাই এটি একাগ্রতা দাবি করে।’
বিবাহ-সংক্রান্ত চার্চের শিক্ষাকে কীভাবে আরও দৃঢ় করা যায়, সে প্রশ্নে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ভ্যাটিকানে দুটি সিনোড বৈঠক হয়। প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের সেই উদ্যোগে শতাধিক কার্ডিনাল ও বিশপ ভবিষ্যৎ ক্যাথলিক ধর্মচর্চা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
আফ্রিকার বহুবিবাহ—যেখানে বহু ক্যাথলিক দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে একাধিক সম্পর্কে যুক্ত—ছিল সবচেয়ে উত্তপ্ত আলোচনার বিষয়। পশ্চিমা দেশের বহুজনের বহু-সঙ্গীভিত্তিক সম্পর্ক অর্থাৎ পলিআমোরাস কাঠামোর উত্থানও সেখানে আলোচিত হয়।
নতুন ডিক্রি বলছে, ‘বহুবিবাহ, পরকীয়া বা পলিআমোরির ভিত্তি সেই ভ্রমে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে মনে করা হয়—সম্পর্কের গভীরতা পাওয়া যাবে একের পর এক নতুন মুখে।’ নথিটিতে তালাকের প্রসঙ্গ নেই। চার্চ তালাককে স্বীকৃতি দেয় না। কারণ, তাদের মতে বিবাহ আজীবন স্থায়ী। তবে চার্চের অ্যানালমেন্ট প্রক্রিয়া রয়েছে, যা দেখে বিবাহ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছিল কি না। পাশাপাশি তারা জোর দিয়েছে, কোনো সঙ্গীকে নিপীড়নমূলক সম্পর্কে থাকতে বাধ্য করা হয় না।