ফ্রান্সের সাহসী নারী জিসেল পেলিকোকে দেশটির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘নাইট অব দ্য লেজিয়ন অব অনার’-এ ভূষিত করা হয়েছে। ফ্রান্সের বাস্তিল দিবসের (১৪ জুলাই) প্রাক্কালে প্রকাশিত সম্মানপ্রাপ্তদের তালিকায় ৫৮৯ জনের মধ্যে ৭২ বছর বয়সী পেলিকোর নাম বিশেষভাবে আলোচিত।
রোববার বিবিসি জানিয়েছে, গত বছর গণধর্ষণের মামলায় নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সাক্ষ্য দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন পেলিকো। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে নিজের পরিচয় গোপন না রেখে আদালতে বলেন, কীভাবে তাঁর স্বামী তাঁকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে এক দশকের বেশি সময় ধরে ধর্ষণ করেছেন এবং প্রায় ৫০ জন অপরিচিত পুরুষকে এনে তাঁর ওপর যৌন নিপীড়ন চালাতে উৎসাহিত করেছেন।
এই ভয়াবহ ও বহুচর্চিত মামলার রায় গত ডিসেম্বরে ঘোষণা করা হয়। আদালত তাঁর স্বামী ডমিনিক পেলিকোকে ২০ বছরের সর্বোচ্চ কারাদণ্ড দেন। আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করেছিলেন ডমিনিক।
জিসেল পেলিকো বিচারপ্রক্রিয়ার প্রায় প্রতিদিনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সাহসিকতা গোটা ফ্রান্সে আলোড়ন তোলে। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি চাই সব ধর্ষণের শিকার নারীরা বলুক—ম্যাডাম পেলিকো পেরেছে, আমিও পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই, লজ্জা যেন ভিকটিমের কাঁধ থেকে অপরাধীর কাঁধে চলে যায়।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ জিসেল পেলিকোর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, ‘তাঁর মর্যাদা ও সাহসিকতা ফ্রান্স এবং পুরো বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে, অনুপ্রাণিত করেছে।’
জানা গেছে, পেলিকোর জীবনের করুণ কিন্তু সংগ্রামী অধ্যায় নিয়ে একটি স্মৃতিকথা আগামী বছরের শুরুতে প্রকাশিত হবে। এতে থাকবে তাঁর কণ্ঠে বলা আত্মজীবনীর বিবরণ—একজন নারীর জেগে ওঠার গল্প।