হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

বৃহত্তম সাবমেরিন ডুবে যাওয়ার ২৫ বছর, কেন তদন্তে বাধা দেন পুতিন

আর্কটিক সার্কেলের ওপরে ব্যারেন্টস সাগরে ডুবে যায় রুশ সাবমেরিন কুরস্ক। ছবি: সংগৃহীত

২০০০ সালের ১০ আগস্ট। আর্কটিক সার্কেলের ওপরে ব্যারেন্টস সাগরে সামরিক কৌশল অনুশীলনে অংশ নিতে বন্দর ছেড়ে যায় রাশিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন ‘কুরস্ক’। দুই দিন পর অর্থাৎ ১২ আগস্ট সেটির একটি অনুশীলন টর্পেডো ছোড়ার কথা ছিল। কিন্তু টর্পেডোটি ছোড়ার আগেই সাগরের তলদেশে হারিয়ে যায় সাবমেরিনটি। পরে এর ১১৮ জন ক্রুকেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও অজানা—ঠিক কী কারণে ডুবেছিল সেটি।

বিভিন্ন আর্কাইভ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২৫ বছর আগের আজকের এই দিনে (১২ আগস্ট) বেলা ১১টা ২৯ মিনিটে খুবই অল্প সময়ের ব্যবধানে সাবমেরিনটির সামনের অংশে দুটি বিস্ফোরণ ঘটে। তবে কেন ও কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটে, তা জানা যায়নি। দীর্ঘ ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো তা রহস্য রয়ে গেছে।

কুরস্কের ১১৮ জন ক্রুর ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা অজানা থাকায় বেশ কয়েকটি দেশ উদ্ধারকাজে সহায়তার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু রুশ সরকার সেই সহায়তা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এক সপ্তাহ পর যখন ডুবুরিরা অবশেষে সাবমেরিনটির কাছে পৌঁছান, তখন তাঁরা প্রাণের কোনো চিহ্ন দেখতে পাননি। ব্যাপক চাপের মুখে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তদন্তের জন্য সাবমেরিনটিকে সাগর থেকে তুলে আনার অনুমতি দেন। যদিও সাগরতল থেকে এত বড় আকারের কোনো জাহাজ বা বস্তু এর আগে কখনো উদ্ধার করা হয়নি। তা ছাড়া ব্যারেন্টস সাগর বছরের বেশির ভাগ সময় বরফে জমে থাকে, তাই উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য খুব কম সময় ছিল।

১০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল নিয়ে দুর্ঘটনার প্রায় এক বছর পর, ২০০১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কুরস্ককে উত্তোলন করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত, সাবমেরিনের সামনের অংশটি কেটে আলাদা করে মূল অংশটি ওপরে আনতে হয়। ফলে বিস্ফোরণের কারণ-সম্পর্কিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণগুলো সাগরের তলদেশেই থেকে যায়।

কুরস্ক ছিল ৫০০ ফুট লম্বা এবং এর ওজন ছিল ২৪ হাজার টন। এতে দুটি পারমাণবিক চুল্লি ছিল এবং এটি ২৮ নটিক্যাল গতিতে চলতে পারত। এটি ছিল বিশ্বের বৃহত্তম আক্রমণকারী সাবমেরিন, যা যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর বৃহত্তম সাবমেরিনের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বড়।

ষড়যন্ত্র তত্ত্ব অনুযায়ী, কুরস্ক সাবমেরিনটির দুর্ঘটনার পেছনে দুটি প্রধান কারণ রয়েছে বলে মনে করা হয়। এই তত্ত্বগুলো অনুযায়ী, সাবমেরিনটি কোনো দুর্ঘটনায় ডোবেনি, বরং এটি অন্য কোনো দেশের সাবমেরিনের সঙ্গে সংঘর্ষের শিকার হয়েছিল।

সবচেয়ে প্রচলিত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব অনুযায়ী, কুরস্ক সাবমেরিনটি একটি মার্কিন সাবমেরিনের সঙ্গে সংঘর্ষে ডুবেছিল। এই তত্ত্বের প্রবক্তারা দাবি করেন, কুরস্ক যখন মহড়ায় অংশ নিচ্ছিল, তখন দুটি মার্কিন সাবমেরিন—ইউএসএস মেমফিস ও ইউএসএস টলেডো সেটিকে অনুসরণ করছিল।

তত্ত্ব অনুযায়ী, কুরস্ক যখন টর্পেডো ছোড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন মার্কিন সাবমেরিনের সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের ফলে সাবমেরিনটির সামনের অংশে বিস্ফোরণ ঘটে এবং সেটি ডুবে যায়। এর পক্ষে একটি যুক্তি হলো, রাশিয়া দুর্ঘটনার পরপরই বিদেশি সহায়তা প্রত্যাখ্যান করেছিল, যা তাদের সাবমেরিনে মার্কিন আক্রমণের প্রমাণ লুকিয়ে রাখার একটি চেষ্টা হতে পারে।

আরও একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনার কারণ ছিল নতুন একটি অস্ত্রের পরীক্ষা, যা ব্যর্থ হয়েছিল। এই তত্ত্ব অনুসারে, কুরস্ক একটি নতুন ধরনের টর্পেডো পরীক্ষা করছিল, যেটি কোনো কারণে কাজ করতে ব্যর্থ হয় এবং সাবমেরিনের ভেতরেই বিস্ফোরিত হয়। এই তত্ত্বের পক্ষে যুক্তি হলো, সাবমেরিনের সামনের অংশটি কেটে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি প্রমাণ লোপাটের একটি প্রচেষ্টা ছিল, যাতে বিশ্ব জানতে না পারে যে রাশিয়া কী ধরনের গোপন অস্ত্র নিয়ে কাজ করছিল।

তবে এই তত্ত্বগুলোর কোনোটিই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। রাশিয়ার সরকার ও সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এই দাবিগুলো সব সময় অস্বীকার করা হয়েছে।

রাশিয়ার পক্ষে খেলবেন ইউক্রেনীয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন সোফিয়া, বাতিল হচ্ছে সব পুরস্কার

ইসরায়েলকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ায় ইউরোভিশন বয়কট ৪ দেশের

খুবই সাধারণ খাবার খান পুতিন, দেশে-বিদেশে খাদ্যতালিকায় যা থাকে

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

রাশিয়ার ক্ষমতা দেখাতেই গুপ্তচর স্ক্রিপালকে বিষ প্রয়োগে হত্যার নির্দেশ দেন পুতিন

কড়া নিরাপত্তায় পুতিনের ভারত সফর, রাশিয়া থেকে উড়িয়ে আনা হলো বুলেটপ্রুফ লিমুজিন

যেভাবেই হোক দনবাস দখলে নেবে রাশিয়া: পুতিন

যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ হচ্ছে বাংলাদেশি–পাকিস্তানি ভর্তি, প্রায় ১২ হাজার ভিসা আবেদন বাতিল

স্মার্টফোন নেই পুতিনের, ব্যবহার করেন না ইন্টারনেটও, কিন্তু কেন