রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং-এর মধ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপন এবং মানুষের ১৫০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে একটি কথোপকথনের ভিডিও প্রত্যাহার করে নিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি (সিসিটিভি) ফুটেজটি ব্যবহারের আইনি অনুমতি প্রত্যাহার করে, সেটি সরিয়ে ফেলার দাবি জানানোর পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
গতকাল শুক্রবার সিসিটিভির আইনি দল রয়টার্সকে লিখিতভাবে জানায়, রয়টার্স তাদের চুক্তি অনুযায়ী ব্যবহারের সীমা অতিক্রম করেছে। তারা এই ফুটেজের ‘সম্পাদকীয় ব্যবহার’-এর সমালোচনা করে। এরপরই রয়টার্স তাদের ওয়েবসাইট থেকে ফুটেজটি সরিয়ে নেয়।
গত বুধবার বেইজিংয়ে উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের সঙ্গে হেঁটে যাওয়ার সময় পুতিন এবং সি অঙ্গ প্রতিস্থাপন এবং মানুষের ১৫০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে শোনা যায়।
পুতিনের দোভাষী চীনা ভাষায় বলেন, ‘বায়োটেকনোলজি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে। মানুষের অঙ্গ ক্রমাগত প্রতিস্থাপন করা যায়। আপনি যত বেশি বাঁচবেন, তত কম বয়সী হবেন, এবং এমনকি অমরত্বও লাভ করতে পারবেন।’
সি এর উত্তরে বলেন, ‘কেউ কেউ ভবিষ্যদ্বাণী করছেন যে এই শতাব্দীতে মানুষ ১৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারবে।’
এই কথোপকথন মাইক্রোফোনে ধরা পড়ে। সেই ফুটেজসহ ওয়েবসাইটে প্রতিবেদন প্রকাশ করে রয়টার্স।
তিন নেতা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনের রাজধানীতে একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের প্রত্যক্ষ করেন। সেখানে দুই ডজনেরও বেশি বিদেশি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সিসিটিভির ধারণকৃত এবং লাইসেন্সকৃত এই ফুটেজটি রয়টার্স চার মিনিটের একটি ভিডিওতে সম্পাদনা করে ১ হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ক্লায়েন্টের কাছে বিতরণ করে। বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এই শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এই ‘অস্বাভাবিক’ কথোপকথনটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
সিসিটিভির আইনি তত্ত্বাবধায়ক লিখিত চিঠিতে বলা হয়েছে, রয়টার্সের এই ফুটেজের ‘সম্পাদকীয় ব্যবহার’ ‘লাইসেন্সকৃত ফিডে থাকা তথ্য ও বক্তব্যকে স্পষ্টতই ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।’ তবে, সিসিটিভি সুনির্দিষ্টভাবে কোন বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে, তা চিঠিতে বিস্তারিত বলা হয়নি।
রয়টার্স তাদের ওয়েবসাইট থেকে ভিডিওটি সরিয়ে নিয়েছে এবং তাদের ক্লায়েন্টদের কাছে একটি ‘কিল’ অর্ডার জারি করেছে। তারা জানায়, যেহেতু তাদের কাছে কপিরাইটযুক্ত এই কনটেন্টটি প্রকাশ করার আইনি অনুমতি আর নেই, তাই এটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তবে, রয়টার্স কোনো ভুল করার কথা অস্বীকার করে বলেছে, তারা ‘যা প্রকাশ করেছে তার তথ্যের নির্ভুলতার পক্ষে’ শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে। সংবাদ সংস্থাটি জানায়, আমরা প্রকাশিত ফুটেজটি সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করেছি এবং আমাদের দীর্ঘদিনের নির্ভুল, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার প্রতি অঙ্গীকার লঙ্ঘিত হয়েছে এমন বিশ্বাস করার কোনো কারণ আমরা খুঁজে পাইনি।