মিয়ানমারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গত সপ্তাহে দেশটির কাচিন রাজ্য সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ব্যবসায়ী নেতা ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত হলেও খনিজে সমৃদ্ধ এই অঙ্গরাজ্য দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায়। থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
মিয়ানমারে মার্কিন দূতাবাসের এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ইরাবতীকে জানিয়েছেন, চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সুসান স্টিভেনসন ১১ থেকে ১৩ আগস্ট কাচিনের রাজধানী মিচিনা সফর করেন। মুখপাত্র বলেন, ‘এই সফর ছিল তাঁর চলমান পরিচিতিমূলক ভ্রমণের অংশ। এর মাধ্যমে তিনি স্থানীয় সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা আরও ভালোভাবে বুঝতে চান।’
সফর সম্পর্কে অবগত এক স্থানীয় সূত্র দ্য ইরাবতীকে জানিয়েছে, স্টিভেনসন কাচিন অঙ্গরাজ্যের মানুষের কথা নিজে শুনতে চেয়েছিলেন।
উত্তর মিয়ানমারে অবস্থিত কাচিন রাজ্যের সীমানা চীনের সঙ্গে যুক্ত। এ অঞ্চল জেড পাথর ও রেয়ার আর্থ তথা বিরল খনিজের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। এসব খনিজ ব্যবহার হয় বৈদ্যুতিক গাড়ি থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মতো নানা প্রযুক্তি তৈরিতে। চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্র এখন এসব রেয়ার আর্থ খনিজের স্থিতিশীল সরবরাহ খুঁজছে।
কাচিন অঙ্গরাজ্য একই সঙ্গে সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুও। এখানে জাতিগত কাচিন ইন্ডিপেনডেন্ট আর্মি (কেআইএ) ও তাদের মিত্ররা ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সাল থেকে কেআইএর নেতৃত্বে বিদ্রোহী বাহিনীগুলো অন্তত এক ডজন শহর দখল করেছে, যার মধ্যে বিরল খনিজ এলাকাও রয়েছে। বর্তমানে লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু হলো ইরাবতী নদীর তীরের কৌশলগত শহর ভামো।
মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, জানুয়ারিতে স্টিভেনসনের মিচিনা সফরের কথা থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখনো মিচিনা জান্তার নিয়ন্ত্রণে। মুখপাত্র বলেন, ‘সফরের সময় স্টিভেনসন কেআইএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বা সামরিক সরকারের কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি।’
সুসান স্টিভেনসন ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ইয়াঙ্গুনে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের স্তর অবনমিত করে।