কঠোর মাদকবিরোধী আইনের জন্য বহির্বিশ্বে পরিচিত ইন্দোনেশিয়া। সেখানে সামান্য পরিমাণ মাদক পাওয়ার ঘটনাতেও কারাদণ্ড থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৫৩০ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৯৬ জন বিদেশি।
আজ সোমবার (২৬ মে) ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বালিতে কোকেন পাচারের অভিযোগে এবার এক অস্ট্রেলীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বয়স ৪৩ বছর, তিনি সিডনির বাসিন্দা। বালির কুটা সৈকতের কাছে ভাড়া করা তাঁর বাড়িতে গত ২২ মে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১ কেজি ৭০০ গ্রাম কোকেন সহ তাঁকে আটক করে। কোকেনগুলো ২০৬টি ক্লিপ প্যাকেটে সংরক্ষিত ছিল। এ ছাড়াও একটি ডিজিটাল স্কেল ও একটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে।
বালি পুলিশের প্রধান ড্যানিয়েল আদিত্যজয় বলেন, পুলিশি তদন্তে দেখা যায়—ওই ব্যক্তি ইংল্যান্ড থেকে ডাকযোগে আসা দুটি সন্দেহজনক পার্সেল গ্রহণ করেছিলেন। গত ২১ মে একটি মোটরসাইকেল ট্যাক্সি সার্ভিস (গ্র্যাব) ব্যবহার করে তিনি একজন চালকের মাধ্যমে পার্সেল দুটি সংগ্রহ করান এবং তা অন্য এক চালকের মাধ্যমে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে আদিত্যজয় বলেন, ‘তিনি প্রথম শ্রেণির মাদক আমদানি বা সরবরাহের অভিযোগে অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড কিংবা আজীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।’
আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ওই অস্ট্রেলীয় নাগরিককে হাজির করা হয়। তাঁর পরনে ছিল কমলা রঙের বন্দীদের পোশাক, মুখে মাস্ক এবং হাতে হাতকড়া। তিনি কোনো বক্তব্য দেননি। অস্ট্রেলীয় কনস্যুলেটকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং তারা কনস্যুলার সহায়তা প্রদান করছে।
এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও উঠে এসেছে ইন্দোনেশিয়ার মাদকবিরোধী কঠোর অবস্থান। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কঠোর আইন থাকার পরও দেশটি আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে, এখানকার তরুণ জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করেই এসব কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এদিকে, আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) ব্রিটিশ নাগরিক থমাস পার্কারের বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়ার ডেনপাসার জেলা আদালতে রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। জানুয়ারিতে তিনি একটি মাদকবাহী পার্সেল গ্রহণ করার সময় ধরা পড়েছিলেন।
গত মার্চেও বালিতে ৩২৪ গ্রাম কোকেন পাচারের অভিযোগে একজন আর্জেন্টাইন নারী ও একজন ব্রিটিশ পুরুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়া সর্বশেষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিল ২০১৬ সালের জুলাই মাসে। সে সময় এক ইন্দোনেশিয়ান ও তিন বিদেশিকে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।