ইসরায়েলের মালিকানাধীন কোনো জাহাজকে নিজেদের বন্দরে ভিড়তে দেবে না মালয়েশিয়া। এমনকি, ইসরায়েলগামী জাহাজের ক্ষেত্রেও এমন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সংবাদ সংস্থা সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানান হয়েছে এ খবর।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কার্যালয় থেকে আজ বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে, হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের বিরোধের কারণে গাজায় চলমান গণহত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং মৌলিক মানবিক নীতিগুলোকে উপেক্ষা করার প্রতিক্রিয়া হচ্ছে এই নিষেধাজ্ঞা।’
২০০৫ সালে ইসরায়েলি নিবন্ধিত কোম্পানি এবং জাহাজগুলোকে মালয়েশিয়ার বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে আজকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকার আজ ইসরায়েলি পতাকা ব্যবহার করা জাহাজকে মালয়েশিয়ার বন্দরে ভেড়ার পূর্বের অনুমতি অগ্রাহ্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলগামী জাহাজগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।’
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি দীর্ঘকাল ধরেই ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের পক্ষে। নিকটবর্তী অন্যান্য কয়েকটি দেশ যেমন—ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনেই, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানের মতো মালয়েশিয়াও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। মালয়েশিয়ার পাসপোর্টেও লেখা রয়েছে, ‘ইসরায়েল ছাড়া সব দেশের জন্য বৈধ।’ ইসরায়েলি পাসপোর্টধারীদের পূর্ব অনুমতি ছাড়া মালয়েশিয়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজায় নির্বিচার বোমাবর্ষণ চালিয়েই যাচ্ছে। এর প্রতিবাদে মালয়েশিয়ায় হচ্ছে জনবিক্ষোভ। তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য আনোয়ার ইব্রাহিমের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে, আনোয়ার ইব্রাহিম ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে স্পষ্টভাষী বিশ্বনেতাদের একজন। সে সঙ্গে, ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এখনো মালয়েশিয়ার অন্যতম ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে রয়ে গেছে।
গত নভেম্বরে পার্লামেন্টে এক বক্তব্যেয় আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছিলেন, মালয়েশিয়া সরকার হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেবে না।