ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক জোটে চলমান তিক্ততার মধ্যেই নেপালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রাম চন্দ্র পাউদেল। গতকাল বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের ভোটে তিনি নির্বাচিত হন। এর মধ্য দিয়ে শতাব্দী প্রাচীন রাজতন্ত্র থেকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ফেরার পর তৃতীয় প্রেসিডেন্ট পেল দেশটি।
নেপালের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, সাবেক স্পিকার পাউদেল পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের ৫৬৬ সদস্য এবং সাতটি প্রাদেশিক পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ইউএমএল পার্টির সুবাস চন্দ্র নেমওয়াংকে পরাজিত করেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা যায়, নেপালের পুরোনো রাজনৈতিক দল নেপালি কংগ্রেস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা পাউদেল। ক্ষমতাসীন জোটের বাইরে গত মাসে তাঁকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল। পুষ্প কমল ‘প্রচণ্ড’ নামে পরিচিত। পাউদেলকে সমর্থন দেওয়ার পর প্রচণ্ডের জোটের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়।
পাউদেলের বিপরীতে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন প্রচণ্ডের জোটের প্রধান শরিক দল কমিউনিস্ট ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্টের (ইউএমএল) সুবাস চন্দ্র নেমওয়াং। তাঁকে সমর্থন না দিয়ে পাউদেলকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেওয়ায় দলের মধ্যে সংকট তৈরি হয়।
এমনকি প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে ইউএমএল। এর জেরে চলতি মাসে তাঁকে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে। কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের নেতারা বলছেন, দলটির চেয়ারম্যান সাবেক মাওবাদী প্রধান প্রচণ্ড আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নেপালি কংগ্রেস পার্টি ও অন্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক জোট গড়তে পারেন।
জোটের বাইরে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোনয়ন দিয়ে শরিক দলের মধ্যে ভাঙনের পাশাপাশি আরেকটি সংকটে রয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড। ২০০৬ সালে শেষ হওয়া দেশটির এক দশকের গৃহযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ওই গৃহযুদ্ধে হাজারো মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় তদন্ত এবং প্রচণ্ডকে গ্রেপ্তারের এক আবেদনের ওপর শুনানি করবে নেপালের সুপ্রিম কোর্ট।