শীতে ঠান্ডা এবং কুয়াশার কারণে অনেকে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকেন না। কিন্তু সারা বছর সক্রিয় থাকা শরীর ও মনের জন্য খুব জরুরি। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে, মানসিক চাপ কমাবে, হৃদ্যন্ত্র ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াবে। এ ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে মানুষ তুলনামূলক বেশি অলস সময় কাটায়। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে বাইরে ব্যায়াম করা কিংবা হাঁটতে যাওয়াকে অনেকে কঠিন মনে করে। অথচ আপনি ঠিকঠাকভাবে প্রস্তুতি নিলে শীতেও শরীরচর্চা উপভোগ করতে পারবেন।
কেন শীতে প্রাণবন্ত থাকা জরুরি
শরীরচর্চা না করলে পেশি ও হাড় দুর্বল হয়ে যায়, শক্তি কমে যায় এবং শরীরে চর্বি ও ব্যথা বেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় নিষ্ক্রিয় থাকলে রক্তচাপ বাড়তে পারে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। তাই শীতেও নিয়মিত সক্রিয় থাকা শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন।
ব্যায়ামের আগে
ঠান্ডায় রক্তনালি সংকুচিত হয়। এতে পেশি এবং জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়। তাই ব্যায়ামের আগে ৫-১০ মিনিট হালকা অনুশীলন করতে হবে। এতে রক্ত চলাচল বাড়বে, শরীর গরম হবে এবং আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে।
সঠিক পোশাক পরুন
শীতে ব্যায়াম করার সময় সঠিকভাবে পোশাক পরা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একাধিক স্তরের পোশাক পরা বেশি কাজে দেয় এ সময়। কারণ, এতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
বেস লেয়ার: ঘামের আর্দ্রতা শোষণ করে শুকনো রাখবে এই ধরনের পাতলা পোশাক।
মিড লেয়ার: শরীরের তাপ ধরে রাখবে এমন উষ্ণ কাপড়।
আউটার লেয়ার: বাতাস ও বৃষ্টি থেকে সুরক্ষা দেবে এমন পোশাক।
ব্যায়ামের আগে ওয়ার্মআপের পোশাক এবং মূল ব্যায়ামের পোশাক আলাদা রাখলে ঘাম জমে ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি কমে।
শরীরে পানির ভারসাম্য রাখুন
ঠান্ডায় তৃষ্ণা কম লাগে, কিন্তু শরীরে পানির প্রয়োজনীয়তা কমে না। ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পরিমাণমতো পানি পান করুন। ব্যায়ামের আগে পর্যাপ্ত পানি পান করুন, চাইলে গরম পানি অথবা চায়ের ফ্লাস্ক রাখতে পারেন সঙ্গে।
শীতে ব্যায়ামের উপকারিতা
ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরচর্চা করলে কিছু বাড়তি সুবিধাও পাওয়া যায়:
অতিরিক্ত ঠান্ডায় ব্যায়ামের ঝুঁকি
শীতকালে শরীরচর্চা বন্ধ রাখার কোনো কারণ নেই। বাইরে হাঁটতে কিংবা দৌড়াতে পারেন। আবার ঘরেও যোগব্যায়াম বা ফিটনেস ক্লাস করা যায়। তবে মনে রাখতে হবে—সঠিক পোশাক পরা, পর্যাপ্ত পানি পান করা, ব্যায়ামের আগে শরীর গরম করা এবং আবহাওয়া অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া। প্রয়োজনে চিকিৎসক কিংবা ফিটনেস প্রশিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজের উপযোগী ব্যায়াম রুটিন ঠিক করে নিন।
সূত্র: হেলথলাইন