হোম > স্বাস্থ্য

চুল পড়ার কারণ এবং প্রতিকারের ব্যবস্থা জেনে নিন

ডা. লুবনা খন্দকার

আমাদের জটিল সমস্যাগুলোর মধ্যে চুল পড়া অন্যতম। প্রাপ্তবয়স্কদের মাথায় প্রায় এক থেকে দেড় লাখ চুল থাকে। প্রতিদিন গড়ে ১০০টি চুল পড়া স্বাভাবিক। সাধারণ পরিস্থিতিতে, চুলের জীবচক্রের টেলোজেন বা বিশ্রাম পর্যায়ের শেষে চুল পড়ে যায় এবং নতুন চুল গজায়। সাধারণত মাথার প্রায় ১০ শতাংশ চুল টেলোজেন পর্যায়ে থাকে। বিশেষ পরিস্থিতিতে ৩০-৪০ শতাংশ চুল টেলোজেন পর্যায়ে যেতে পারে। তিন মাস পরে মাথার চুলে বড় আকারের পরিবর্তন আসে।

নতুন চুল সাধারণত হারিয়ে যাওয়া চুল প্রতিস্থাপন করে। তবে এটি সব সময় ঘটে না। চুল পড়ে যাওয়া বছরের পর বছর ধীরে ধীরে ঘটতে পারে। আবার হঠাৎও ঘটতে পারে। চুল পড়া স্থায়ী বা অস্থায়ী হতে পারে।

চুল পড়ার কারণ
»    বংশগত অবস্থা। এটি বয়সের সঙ্গে বা বার্ধক্যের কারণে ঘটে। এটি চুল পড়ার সর্বাধিক সাধারণ কারণ।
»    চুল পড়া সাধারণভাবে কোনো রোগের লক্ষণ নয়। থাইরয়েডের রোগ, যেমন হাইপোথাইরয়েডিজম, হাইপারথাইরয়েডিজম, রক্তস্বল্পতা, মাথার ত্বকের দাদ চুলের ক্ষতি করতে পারে।
»    উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, গাউট, বিষণ্নতা, হৃদ্‌রোগের চিকিৎসা ব্যবহৃত ওষুধ অনেক সময় চুল পড়ার জন্য দায়ী। 
»    ক্যানসার কেমোথেরাপির মতো কিছু ওষুধের ফলে অস্থায়ীভাবে চুলের ক্ষতি হতে পারে। তবে ওষুধ বন্ধ করা হলে চুলের বৃদ্ধি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।
»    কিছু ক্ষেত্রে প্রসবের পরে বা মেনোপজের সময় হরমোনের প্রভাবে নারীদের চুল পাতলা বা পড়ে যেতে পারে। 
»    গর্ভনিরোধক বড়ি বন্ধ করা, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম ইত্যাদি হরমোন ভারসাম্যহীনতার কারণগুলো নারীদের চুল পড়ার সঙ্গে জড়িত। 
»    সাধারণ টাক বা বলডিং (অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেসিয়া) পুরুষ ও নারীদের মধ্যে ঘটে। এটি জিনগতভাবে সংবেদনশীল চুলের ফলিকলের টেস্টোস্টেরন বিপাকের প্রভাবের কারণে ঘটে।
»    তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা, বিশেষ করে জ্বর থাকলে, এইডস রোগ, অস্ত্রোপচার, দুর্ঘটনা এবং মানসিক চাপের কারণে চুল পড়তে পারে।
»    হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, অস্বাভাবিক ডায়েট নিয়ন্ত্রণ অথবা পুষ্টির ঘাটতি, যেমন আমিষ বা প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি, জিংক, ক্যালসিয়াম অথবা আয়রনের ঘাটতি চুল পড়ার জন্য দায়ী। 
»    মাথার ত্বকের মাথার সোরিয়াসিস, লাইকেন প্লানাস, সেবোরিক একজিমা, লুপাস ইরাইথেমাটোসাস জাতীয় চর্মরোগ চুল পড়ার সঙ্গে জড়িত।
»    চুলের স্টাইলের কারণ, যেমন চুল সোজা করা বা আয়রনিং করা, চুলে রং করা, চুল শক্ত করে দীর্ঘ সময় বেঁধে রাখার ফলেও চুল পড়তে পারে।
»    হট অয়েলিং হেয়ার চিকিৎসা, অনেকের চুল টেনে টেনে ওঠানোর অভ্যাস এবং মানসিক আঘাতে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 
»    মাথার ত্বকের বিশেষ চুলের ফলিকলগুলোর অটোইমিউন সিস্টেম ধ্বংস থেকেও থোকা থোকাভাবে চুল পড়ে যেতে পারে।

পরামর্শ
»    চুল পড়ার কারণে আশাহত হওয়া যাবে না।
»    চুল পড়ার কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং প্রয়োজনে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়ে 
চিকিৎসা নিতে হবে। 
»    প্রতিদিন গোসলের আগে এবং রাতে ঘুমানোর আগে চুল আঁচড়াতে হবে।
»    মাথার তালু পরিষ্কার রাখতে হবে। মেডিকেটেড শ্যাম্পু দিয়ে সপ্তাহে দুই দিন মাথার তালু ও চুল পরিষ্কার করতে হবে।
»    পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
»    পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। 
»    রাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
»    দৈনিক শরীরচর্চা করতে হবে। 
»    মানসিকভাবে চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, বিএসএমএমইউ

ভারতে চিকিৎসকদের জন্য হাতে প্রেসক্রিপশন লেখার নতুন নিয়ম

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি: অর্থায়ন বন্ধে যক্ষ্মা বিস্তারের শঙ্কা

এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৬.৫৭ শতাংশ

শীতে যেসব খাবার মন শান্ত রাখবে

পুরুষ বন্ধ্যত্ব: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শীতকালীন নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন যেভাবে

রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে করণীয়

থাইরয়েড হরমোন কম থাকার লক্ষণ

ওষুধকে ফাঁকি দিতে মরার ভান করে ক্যানসার কোষ—গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য

সাধারণের স্বাস্থ্যসেবা: মিলিয়ে যাচ্ছে ‘সূর্যের হাসি’