সমগ্র বিশ্বে ১৯০ মিলিয়ন নারী এন্ডোমেট্রিওসিসে ভুগছেন। ৫-১০ শতাংশ নারীর এন্ডোমেট্রিওসিস হতে পারে। যেসব নারী বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ১০০ জনের মধ্যে ২৫-৫০ জনের বন্ধ্যত্বের কারণ এই এন্ডোমেট্রিওসিস।
জরায়ুর ভেতর তিনটি স্তর থাকে। সবচেয়ে ভেতরের স্তরের নাম এন্ডোমেট্রিয়াম। এই এন্ড্রোমেট্রিয়াম যদি জরায়ুর বাইরে বর্ধিত হয় সে অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে এন্ডোমেট্রিওসিস। এই এন্ডোমেট্রিওসিসের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সাধারণত ডিম্বাশয়ে পাওয়া যায়। তা ছাড়া জরায়ুর আশপাশে বিভিন্ন লিগামেন্ট, জরায়ুর বাইরের স্তর, পেটের ভেতরের আবরণী পেরিটোনিয়াম, ডিম্বনালি, মূত্রথলি, মলদ্বার, মাসিকের রাস্তায় এমনকি নাভি কাটা সেলাইয়ের ওপরও পাওয়া যায়।
- যাঁদের উপসর্গ সামান্য ও যাঁদের মেনোপজের সময় আসন্ন, তাঁদের জন্য তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
- যাঁরা এই মুহূর্তে সন্তান চাচ্ছেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে মাসিক বন্ধ রাখা যেতে পারে।
- মাসিক বন্ধ রাখার জন্য একটানা ৬-৯ মাস স্বল্প মাত্রার জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি অথবা প্রজেস্টেরন বড়ি দেওয়া হয়।
- লেট্রোজোল, প্রজেস্টেরন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি একত্রে ৬ মাস খেলে অনেক সময় উপকার পাওয়া যায়।
- যাঁরা বন্ধ্যত্ব সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার পদ্ধতি বয়স, বিয়ের বয়স, কত দিন থেকে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করছেন, ডিম্বাশয়ে ডিমের রিজার্ভ কেমন, এন্ডোমেট্রিওসিস কোন স্টেজে আছে ইত্যাদি তথ্যের ওপর নির্ভর করে।
- এন্ডোমেট্রিওসিস প্রাথমিক স্টেজে থাকলে ডিম্বানু বড় হওয়ার ওষুধ দিয়ে সহবাসের সময় নির্ধারণ করে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে। অনেক সময় আইইউআই পদ্ধতির পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রয়োজন হলে চিকিৎসক ল্যাপারোস্কপির পরামর্শ দেন।
- যেসব নারীর বয়স বেশি, ডিম্বাশয়ের রিজার্ভ কম এবং স্টেজ৩ থেকে স্টেজ৪ এন্ডোমেট্রিওসিসে ভুগছেন, তাঁদের আইবিএফ বা টেস্ট টিউব বেবির মাধ্যমে সন্তান নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।