হোম > স্বাস্থ্য

কম বয়সীদের মধ্যে হৃদ্‌রোগ বাড়ছে

আজাদুল আদনান, ঢাকা

ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আসিফ (১৪) হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে তাকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে বেসরকারি হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা দ্রুত তাকে হৃদ্‌রোগ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। ১০ দিন আগে জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।

আসিফের মা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর ছেলে নেশা করে না। কোনো বদভ্যাস নেই। তারপরও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে বুকটা কেঁপে ওঠে। ইতিমধ্যে ইসিজিসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা তার হৃদ্‌রোগের কারণ জানার চেষ্টা করছেন।

শুধু আসিফ নয়, দেশের প্রধান এই হৃদ্‌রোগ হাসপাতালে আগের তুলনায় কম বয়সী রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কয়েক বছর আগেও কম বয়সী রোগীর হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলেও এখন তা প্রায় ২০ শতাংশ।

করোনায় চাপ কিছুটা কমায় এখন বেশি রোগী আসছে, খালি নেই কোনো শয্যা। নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (সিসিইউ) থেকে শুরু করে সাধারণ ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী। করোনার আগে দিনে ১০০-১৫০ রোগী আসত, এখন আসে প্রায় ২০০।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, ওয়ার্ডের বাইরে মেঝেতে রোগী। সিসিইউতে প্রতিনিয়ত রোগী আসছে। এই বিভাগে ৩২টি শয্যা থাকলেও এদিন দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন ৪৮ রোগী।

দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স ফাহিমা বেগম বলেন, আগের তুলনায় রোগীর চাপ অনেক বেড়েছে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নতুন রোগী এসেছেন ১১ জন। অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি সংকটাপন্ন রোগী আছেন ছয়জন। দিনে এখানে ৩০-৪০ রোগী আসেন।

হৃদ্‌রোগের এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আজ বুধবার বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব হৃদ্‌রোগ দিবস।

হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক প্রদীপ কুমার কর্মকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়েক বছর আগেও দেশে কিশোর-তরুণদের হৃদ্‌রোগে আক্রান্তের হার ৫ শতাংশের কম ছিল। সম্প্রতি এই হার বেড়ে ২০ শতাংশে পৌঁছেছে। বিশেষ করে জাঙ্ক ফুড ও মাদকে যাদের আসক্তি বেশি, তারাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

প্রদীপ কুমার বলেন, ‘আগে ৩০ বছরের নিচে হৃদ্‌রোগী পাওয়া যেত না; কিন্তু এখন এটি মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখনই সচেতন করা না গেলে ভবিষ্যতে কিশোর-তরুণদের একটা অংশকে হারাব আমরা।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এনসিডি কান্ট্রি প্রোফাইল ২০১৮ অনুসারে, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৩০ ভাগই হয় হৃদ্‌রোগে। সংখ্যার হিসাবে যা প্রায় পৌনে ২ লাখ।

অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের হিসাবে, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে হৃদ্‌রোগে ১ কোটি ৮৬ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের তথ্য বলছে, দেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যু হয় ৬৭ শতাংশ মানুষের। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের মৃত্যু হয় হৃদ্‌রোগে। উন্নত দেশে হৃদ্‌রোগে আক্রান্তের গড় আয়ু ৬০ বছর হলেও বাংলাদেশে তা ৫০ বছর।

এই হাসপাতালের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, ধূমপান, লবণ বেশি খাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া এবং হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়া হৃদ্‌রোগ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এসব কারণে আমাদের দেশে এখন কম বয়সীরাও আক্রান্ত হচ্ছে।

এই চিকিৎসক বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি হাইপার টেনশন ও ডায়াবেটিসের সেবার মান বাড়াতে হবে। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে উপজেলা পর্যায়ে অন্তত যেন প্রাথমিক চিকিৎসাটা পায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

রেইনবো ডায়েট কী, সুস্বাস্থ্যের জন্য কেন দরকারি

ওজন কমাতে অনুপ্রেরণা ধরে রাখবেন যেভাবে

শীতে থাইরয়েড রোগীরা যা করবেন

সবজির পুষ্টিগুণ পাওয়ার সঠিক উপায়

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে

প্রতিস্থাপনে শূকরের অঙ্গ একদিন মানব অঙ্গের চেয়ে উন্নত হতে পারে: বিশেষজ্ঞ

কিডনি রোগীর বন্ধু কামরুল

কবিরাজিসহ প্রথাগত চিকিৎসার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন