প্যানিক ডিসঅর্ডার এমন একটি মানসিক রোগ, যাতে ব্যক্তি প্রচণ্ড আতঙ্কের শিকার হন। সাধারণত প্রতিটি প্যানিক অ্যাটাকের স্থায়িত্বকাল ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মতো হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৩০ মিনিটের বেশি হতে পারে এবং প্রতি মাসে কমপক্ষে এক বার প্যানিক অ্যাটাক হবে।
- দ্রুত হৃৎস্পন্দন বা হার্ট রেট বেড়ে যাওয়া
- বুকে ব্যথা
- শ্বাসকষ্ট
- অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
- ঝিমুনি ভাব
- দুর্বলতা
- পেটে ব্যথা।
মানসিক লক্ষণ ও উপসর্গ
- প্রচণ্ড নার্ভাস হওয়া
- প্রচণ্ড ভয় পাওয়া
- মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা
- একা থাকতে চাওয়া এবং লোকের সঙ্গ এড়ানোর প্রবণতা।
কারণ
প্যানিক ডিসঅর্ডারের পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে মূলত মস্তিষ্কে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান ও হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এর জন্য দায়ী। এ রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে অন্যদের তুলনায় চার থেকে আট গুণ বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর যে কারণগুলো পারিপার্শ্বিক নিয়ামক হিসেবে থাকতে পারে সেগুলো হলো,
- বৈবাহিক কিংবা দাম্পত্যজীবনে জটিলতা
- কোনো দুর্ঘটনা
- আর্থিক সমস্যা
- অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ বা গর্ভপাত
- কোনো প্রত্যাশিত কাজে ব্যর্থতা
- নেশার জন্য
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- বিভিন্ন প্রকার ফোবিয়া
করণীয়
এ রোগে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়ার সঙ্গে কিছু মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা অর্থাৎ সাইকোথেরাপি ও কাউন্সেলিং দেওয়া হয়। এর মধ্যে থাকে,
- কগনিটিভ বিহেভিয়র থেরাপি
- রিলাক্সেশন টেকনিক
- ফ্যামিলি থেরাপি ইত্যাদি
যা জানা দরকার
- প্যানিক অ্যাটাক প্রাণঘাতী রোগ নয়। কিন্তু মানুষের আত্মবিশ্বাসের ওপর এটি প্রভাব ফেলতে পারে। এ রোগের উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সময়মতো সহায়তা ও উপসর্গের সচেতনতার সাহায্যে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- আপনি যদি প্যানিক অ্যাটাক নিয়ে উদ্বিগ্নতায় ভোগেন এবং কীভাবে তা মোকাবিলা করবেন সেই চিন্তায় থাকেন, তাহলে অভিজ্ঞ সাইকোথেরাপিস্ট, কাউন্সিলর বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে কাউন্সেলিং সেশন নিতে পারেন।
লেখক: সাইকোলজিস্ট ও ট্রেইনার