হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

গলা ও বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা: কেন হয় এবং প্রতিরোধে করণীয়

ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী 

গলা বা বুক জ্বালাপোড়া, টক কিংবা তিতা ঢেকুর, খাবার ওপরে উঠে আসা, গলায় কিছু আটকে থাকার অনুভূতি, খাবার গিলতে কষ্ট, এমনকি স্বর ভাঙা—এসব উপসর্গে হরহামেশা মানুষ ভোগে। এগুলো একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন এবং কাজের সক্ষমতা ব্যাহত করে। ইএনটি চিকিৎসায় আমরা অনেক সময় গলা পরীক্ষা করে কোনো ক্ষত, প্রদাহ বা সিরিয়াস প্যাথলজি না পেলে এসব সমস্যার মূল কারণ হিসেবে গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (জিআরইডি) শনাক্ত করি।

১৯৯৯ সাল থেকে প্রতি নভেম্বর মাসে বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ সচেতনতা সপ্তাহ। এ বছরও ২৩-২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে জিআরইডি সচেতনতা সপ্তাহ ২০২৫।

এই বছরের মূল বিষয় হলো, ‘চলুন, জিআরইডি নিয়ে কথা বলি’; যা রোগীর উপসর্গ, চিকিৎসা ও ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করার গুরুত্বকে আরও জোরদার করে।

বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ১৫ জন জিআরইডিতে ভুগছেন। ইউরোপ ও আমেরিকায় এর প্রকোপ বেশি হলেও এশিয়ায়, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ায় রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। প্রতিরোধ সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে অনেক রোগী জটিলতায় পড়েন এবং দীর্ঘদিন ওষুধনির্ভর থাকতে হয়।

গলা ও বুক জ্বালাপোড়া কেন হয়

‘গ্যাস্ট্রো’ বলতে পাকস্থলী আর ‘ইসোফেগাস’ বলতে খাদ্যনালিকে বোঝায়। সাধারণত খাবার খাদ্যনালি দিয়ে নিচের দিকে পাকস্থলীতে নামে। কিন্তু কোনো কারণে এই স্বাভাবিক পথ ব্যাহত হলে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালির ওপরের দিকে উঠে আসে। এই অ্যাসিডই গলা ও বুক জ্বালাপোড়া, টক ঢেকুরসহ নানা উপসর্গ তৈরি করে।

  • যাঁদের জিআরইডি হওয়ার ঝুঁকি বেশি
  • অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় ভোগেন
  • ধূমপানের অভ্যাস যাঁদের আছে
  • একবারে বেশি খাবার খান
  • খাবারের পরপরই শুয়ে পড়েন
  • বেশি তেলেভাজা ও মসলাযুক্ত খাবার খান
  • কোমল পানীয় ও অনিয়মিত কফি সেবন
  • গর্ভবতী নারীদের পেটে চাপ বাড়ায় ঝুঁকি বেশি

বয়স্কদের ক্ষেত্রে সতর্কতা

বুক জ্বালাপোড়া সব সময় জিআরইডি না-ও হতে পারে। তবে হৃদ্‌রোগের কারণেও একই উপসর্গ হতে পারে। পার্থক্য বোঝার জন্য কিছু লক্ষণ জানা খুব জরুরি।

  • জিআরইডি: বুক ও গলায় জ্বালা, টক ঢেকুর
  • হৃদ্‌রোগ
  • বাঁ হাত/ঘাড়/চোয়ালে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ঘাম, বমি বমি ভাব, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, অস্থিরতা—এসব উপসর্গ থাকলে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।

প্রতিরোধে যা করবেন

  • একবারে বেশি খাবেন না, দিনে অল্প অল্প করে ভাগ করে খাবেন।
  • খাবার ভালো করে চিবিয়ে খান।
  • রাতের খাবার শোয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে খাবেন।
  • মানসিক চাপ কমান, স্ট্রেস বাড়লে অ্যাসিড নিঃসরণও বাড়ে।
  • ঢিলেঢালা পোশাক পরুন, বিশেষ করে রাতে।
  • ভরা পেটে ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন।
  • ব্যথানাশকসহ কিছু ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন।
  • খাওয়ার পর শোয়ার সময় মাথার দিক সামান্য উঁচুতে রাখুন।
  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করুন।

লেখক: আবাসিক সার্জন (ইএনটি), সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

৬ দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা

টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতিতে দিনভর দুর্ভোগ

শৌচাগার সুবিধা: হাসপাতালে বিড়ম্বনায় প্রতিবন্ধীরা

ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৫৬৫

এইডস দিবসের আলোচনা: চলতি বছর দেশে সর্বোচ্চ এইডস রোগী শনাক্ত

ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬১০

ডেঙ্গু: এক দিনে মারা গেল আরও ৫ জন, নভেম্বরে সর্বোচ্চ মৃত্যু

শীতে ত্বকের যত্ন ও চর্মরোগ থেকে পরিত্রাণের উপায়

শীতকালীন বিষণ্নতা কাটাতে যা করবেন

নাক ডাকা: কারণ, ঝুঁকি ও পরিত্রাণের উপায়