হোম > স্বাস্থ্য

পারকিনসনকেও হারিয়ে দেওয়া সম্ভব

নাজমুল হক মুন্না

অকারণে হাত-পা কাঁপা, হাঁটাচলা ধীর হয়ে যাওয়া ও শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা ইত্যাদি পারকিনসন রোগের লক্ষণ। পারকিনসন সাধারণত বৃদ্ধ বয়সের রোগ; তবে কিছু ক্ষেত্রে অল্প বয়সেও পারকিনসন দেখা দিতে পারে।

কেন হয়?
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পারকিনসন রোগের কারণ অজানা। তবে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়, মস্তিষ্কে প্রদাহ (এনসেফালাইটিস), স্ট্রোক ইত্যাদি বিভিন্ন কারণেও পারকিনসন হতে পারে। অল্প বয়সে কারও পারকিনসন দেখা দিলে ‘উইলসন ডিজিজ’ নামক একটি রোগের কথাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

লক্ষণসমূহ
-হাঁটাচলা ধীর হয়ে যাওয়া, কথার আওয়াজ কমে যাওয়া, লেখা ছোট ও লেখার গতি কমে যাওয়া
-হাত অথবা পা কাঁপা
-হাত-পা শক্ত হয়ে যাওয়া
-ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা; বিশেষ করে হাঁটাচলার সময়
-এ ছাড়া স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা ইত্যাদিও পারকিনসন রোগের লক্ষণ।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা
পারকিনসন রোগ নির্ণয় করতে হলে চিকিৎসককে রোগীর ইতিহাস মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে ও প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা করাতে হবে। কোনো ওষুধের দীর্ঘমেয়াদি সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় পারকিনসন রোগ দেখা দিচ্ছে কি না, তা ভালো করে দেখতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা কমানোর ওষুধ অথবা মানসিক রোগের ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি সেবনে এই রোগ দেখা দিতে পারে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে রোগের কারণ নির্ণয়ের জন্য মস্তিষ্কের এমআরআই পরীক্ষা করা যেতে পারে।

চিকিৎসা
পারকিনসন নিরাময়যোগ্য রোগ নয়, তবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। এই রোগের চিকিৎসা শুরুর পূর্বে রোগীর সঙ্গে এ রোগের লক্ষণ, চিকিৎসার প্রক্রিয়া, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও দীর্ঘমেয়াদি ভালো থাকার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।

মস্তিষ্কের ডোপামিনের অভাবে পারকিনসন রোগ হয়; তাই ডোপামিন জাতীয় ওষুধ এই রোগের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। এ ছাড়া আরও অনেক ধরনের ওষুধ পারকিনসন নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়; যার প্রতিটিরই বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ওষুধের পাশাপাশি ব্যায়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। যাঁদের ভারসাম্য রক্ষা করতে সমস্যা হয়, তাঁরা হাঁটাচলা করার সময় ভারসাম্য প্রদানকারী লাঠি ব্যবহার করতে পারেন।

চিকিৎসায় নতুন কি?
গত দশকে পারকিনসন রোগের চিকিৎসায় নতুন অনেক দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। ‘ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন’ নামক একধরনের শল্যচিকিৎসা ওষুধে নিয়ন্ত্রণ যোগ্য নয় এমন ধরনের পারকিনসন রোগের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর।

মূল কথা, পারকিনসন রোগীকে এই রোগ সম্পর্কে জানতে হবে। সঠিক চিকিৎসা, নিয়মিত ব্যায়াম ও নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে পারকিনসন রোগী দীর্ঘ দিন প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।

লেখক: চিকিৎসক ও সহকারী অধ্যাপক (নিউরোলজি), মুগদা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

ভারতে চিকিৎসকদের জন্য হাতে প্রেসক্রিপশন লেখার নতুন নিয়ম

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি: অর্থায়ন বন্ধে যক্ষ্মা বিস্তারের শঙ্কা

এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৬.৫৭ শতাংশ

শীতে যেসব খাবার মন শান্ত রাখবে

পুরুষ বন্ধ্যত্ব: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শীতকালীন নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন যেভাবে

রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে করণীয়

থাইরয়েড হরমোন কম থাকার লক্ষণ

ওষুধকে ফাঁকি দিতে মরার ভান করে ক্যানসার কোষ—গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য

সাধারণের স্বাস্থ্যসেবা: মিলিয়ে যাচ্ছে ‘সূর্যের হাসি’