অন্ত্র ভালো থাকলে সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা সম্ভব। অন্ত্র ভালো রাখার জন্য প্রথমে খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দিতে হবে। অন্ত্র ভালো রাখতে ফারমেন্টেড খাবারের জুড়ি নেই। দই আমাদের দেশে সহজলভ্য ফারমেন্টেড খাবার। তবে সবজিও ফারমেন্টেড করা যায়।
কেন খাবেন
প্রতিদিন জাঙ্কফুড খাওয়া, ঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া, বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া ইত্যাদি কারণে অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ছে।
অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া খাবার হজমে, খাদ্য থেকে পুষ্টিগুণ শোষণে ও কিছু ভিটামিন তৈরিতে সহায়তা করে। শরীরে ভিটামিনের জোগান দিতে ফারমেন্টেড খাবারগুলো ভীষণভাবে সাহায্য করে। শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, ই, সি, কে ও ফলিক অ্যাসিড। এগুলো ফারমেন্টেড খাবারে পাওয়া যায়।
ফারমেন্টেড সবজি
সাধারণ ফারমেন্টেড খাবারের মধ্যে দই অন্যতম। কিন্তু দুধে চর্বি থাকে বলে দই বানানোর পরও সেটা রয়ে যায়। ফলে যেকোনো শারীরিক অবস্থা বা অসুস্থতার জন্য দই খাওয়া ভালো নয়। সে ক্ষেত্রে এমন ফারমেন্টেড খাবারের উৎস খুঁজতে হবে, যা যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে যেকোনো মানুষ খেতে পারবে। অনেক আগে থেকেই কোরিয়ায় মূল খাবারের সঙ্গে থাকে ফারমেন্টেড ভেজিটেবল। এটা সবাই যেকোনো অবস্থায় খেতে পারে। এর খরচও কম। ফারমেন্টেশন করা যায় যেকোনো সবজি দিয়ে। সব সবজিতেই প্রচুর মিনারেল থাকে।
এসবের মধ্যে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর হচ্ছে–ফারমেন্টেড বাঁধাকপি।
প্রস্তুত প্রণালি
লবণ পানির মাধ্যমে ফারমেন্টেশন করা হয়। সৈন্ধব লবণ ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে সবজি কুচিয়ে নিয়ে পরিমাণমতো সৈন্ধব লবণ মাখিয়ে নিন। এরপর কাচের জারে কুচিয়ে রাখা সবজিগুলো চেপে চেপে বসিয়ে দিন,যাতে বাতাস না থাকে।
খেয়াল রাখতে হবে জারের ওপরের দিকে যেন দুই ইঞ্চি পরিমাণ ফাঁকা থাকে। এরপর ওপরে পরিষ্কার একটা পাথর রাখা যেতে পারে। এরপর পানি দিন। পাথর থাকলে সবজি ওপরে উঠে যাবে না। এভাবে জারটি ঠান্ডা জায়গায় দুই সপ্তাহ রাখতে হবে।
ফার্মেন্টেড প্রক্রিয়া শুরু হলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়ে বাবল তৈরি হবে।
ফারমেন্টেশনে ক্লোরিন সমস্যা তৈরি করে। তাই স্বাভাবিক পানি না ঢেলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নেওয়া পানি ব্যবহার করুন। ফারমেন্টেড সবজি দিয়ে সালাদ বানানো যাবে। তবে এমনি খেলেই বেশি উপকার পাওয়া যায়।
লেখক: নিউট্রিশনিস্ট ও হোলিস্টিক লাইফস্টাইল মোডিফায়ার।