হোম > ফ্যাক্টচেক > জানি, কিন্তু ভুল

ঘামের মাধ্যমে মানুষের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়! চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলে

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক

ঘামের মাধ্যমে মানুষের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়? ছবি: ফ্রিপিক

পরিশ্রম করলে মানুষের শরীর থেকে ঘাম বের হয়। ঘামের মধ্যে পানি ও লবণ থাকে তা সাধারণভাবে সবাই জানে। কিন্তু ঘাম মানুষের শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়—এমন একটি কথাও বহুদিন ধরে লোকমুখে প্রচার হয়ে আসছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এই বিষয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলে তা জানার চেষ্টা করেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।

এ বিষয়ে সার্চ করে ইউনিভার্সিটি অব আরকানসাস ফর মেডিকেল সায়েন্সেসের (ইউএমএস) ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। তাতে চিকিৎসক চার্লস স্মিথের একটি মন্তব্য পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ঘামের ৯৯ শতাংশ হচ্ছে পানি। এর সঙ্গে অল্প পরিমাণে লবণ, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ইউরিয়া থাকে।

ডা. স্মিথ বলেন, ঘামের মাধ্যমে কারও শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয় না। পারদ, অ্যালকোহল ও বেশির ভাগ ওষুধের মতো পদার্থগুলো মানুষের লিভার, অন্ত্র বা কিডনির মাধ্যমে নির্গত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ওশনার হেলথের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ঘাম মূলত মানুষের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি অতিরিক্ত গরমে মানুষের শরীরকে ঠান্ডা রাখে। কেউ চাপ অনুভব করলে শরীরে অ্যাড্রেনালিন তৈরির প্রতিক্রিয়া হিসেবেও কখনো কখনো ঘাম হয়। ঘামের ৯৯ শতাংশ পানি এবং ঘামের মধ্যে খুব অল্প পরিমাণে ভারী ধাতু এবং দূষণকারী পদার্থ পাওয়া যায়। তবে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।

ঘামের মাধ্যমে মানুষের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয় কি না, এই বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল হাইপারহাইড্রোসিস সোসাইটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। তা থেকে জানা যায়, ঘামের মাধ্যমে মানুষের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয় না। মানুষের শরীর থেকে ঘাম বের হয় সাধারণত নিজেদের শরীরকে ঠান্ডা করার জন্য, বিষাক্ত পদার্থ বের করার জন্য নয়। ঘামের মধ্যে ৯৯ শতাংশ পানি থাকে। এর সঙ্গে খুব অল্প পরিমাণ লবণ, শর্করা, আমিষ এবং কিছু ইউরিয়া মিশ্রিত থাকে। রক্ত পরিশোধন, ওষুধের বিপাক প্রক্রিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থকে বর্জ্য পদার্থে রূপান্তরের মাধ্যমে মানুষের শরীর থেকে প্রকৃত বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে লিভার ও কিডনি।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মানুষের শরীর থেকে ঘাম বের হয় মূলত শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য, বর্জ্য বা বিষাক্ত পদার্থ বের করার জন্য নয়। মানুষের শরীর থেকে বর্জ্য বা বিষাক্ত পদার্থ বের করার কাজ করে কিডনি ও লিভার। এ ছাড়া অন্য কোনোভাবে মানুষের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয় না, ঘামের মাধ্যমেও না।

সুতরাং, ঘাম মানুষের শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়—চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। ঘামের মধ্যে ৯৯ শতাংশ পানি এবং এর সঙ্গে লবণ, শর্করা, আমিষ ও কিছু ইউরিয়ার মিশ্রণ থাকে। তাই ঘামের সঙ্গে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের হওয়ার ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

গোপালগঞ্জ সহিংসতা নিয়ে অসম্পর্কিত ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে আ. লীগ: প্রেস উইং

নিহত সোহাগকে হিন্দু দাবি করে মিথ্যা প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম: প্রেস উইং

নাটকের দৃশ্যকে ধর্ষণের পর হত্যা দাবিতে প্রচার

পটুয়াখালীতে তরুণীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে যা জানা গেল

ইন্দুরকানীতে দেবর-ভাবিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি কি রাজনৈতিক

ইটভাটায় যুবক ও চিতাবাঘের লড়াইয়ের ভিডিও বাংলাদেশের নয়, ভারতের