হোম > ছাপা সংস্করণ

কী রেখে কী কিনবেন তা নিয়ে দিশেহারা

আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ

রংপুরের বদরগঞ্জে ঊর্ধ্বমুখী বাজারদরের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না স্বল্প আয়ের মানুষেরা। বিশেষ করে দিনমজুর শ্রেণির লোকজন সারাদিনের কাজ শেষে অল্প কিছু টাকা নিয়ে বাজারে এসে কী রেখে কী কিনবেন তা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।

পৌরসভা বাজারে কথা হয় ওসমানপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। পেশায় রিকশাভ্যানচালক রফিকুলের সংসারে আছেন স্ত্রী ও দুই সন্তান। তিনি সারাদিন ভ্যানের প্যাডেল মেরে উপার্জন করেন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। আগে টানাটানি করে হলেও এই টাকায় সংসার ও দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ চলে যেত। কিন্তু বর্তমানে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে এই টাকায় সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। তার ওপর আছে দুই সন্তানের লেখাপড়া। এই খরচ কীভাবে সামাল দেবেন এ নিয়ে এখন চিন্তিত তিনি।

রফিকুল জানান, সারাদিন ভ্যান চালিয়ে উপার্জনের ৩৫০ টাকা নিয়ে তিনি বাজারে এসেছিলেন। ১২০ টাকায় ২ কেজি চাল, ১০০ টাকায় আধা লিটার খোলা সয়াবিন তেল, ৬০ টাকায় ২ কেজি আলু এবং ৩৫ টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ কেনন। এই চারটি পণ্য কেনার পর তাঁর হাতে থাকল ৩৫ টাকা। এখন এই টাকা দিয়ে কী কিনবেন আর কী বাদ দেবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। কারণ বাড়ি থেকে আসার সময় স্ত্রীর দেওয়া তালিকা অনুযায়ী এখনও বাদ রয়ে গেছে লবণ, পেঁয়াজ, মসলা ও পান-সুপারি। দুই সন্তান তাঁকে খাতা-কলমও নিতে বলেছে।

এ সময় রফিকুলের মুখ থেকে শোনা গেল ক্ষোভ ও হতাশার কথা। বলেন, ‘দেশ তো ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ কী হইল। সউগ জিনিসের দাম বাড়াই দিলো। হামার গরিবের কথা একনাও ভাবল না।’

রফিকুলের মতো অনেকে বাজারে এসে হিসাব মেলাতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করছেন। দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় তার প্রভাব পড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যে। এই পণ্য কিনতে গিয়ে মেজাজ ঠিক রাখতে পারছেন না দিনমজুরেরা।

মোস্তফাপুর শৌলাপাড়া গ্রামের রিকশাভ্যানচালক অজয় রায় বলেন, ‘ভ্যান চালিয়ে আগোতও কামাই করচি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এখনও কামাই ওই টাকাই। আয় না বাড়লেও ব্যয় বাড়চে ম্যালায় গুণ। কোনো দিন খাসির মাংস কিনে মুখোত দিতে পারিনি। মাঝেমধ্যে ডিম, মাছ ও ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনে খাইছি। এখন এগুলোরও দাম দ্বিগুণ। হামার গরিব মানুষোক বুঝি আর সরকার বাঁচি থাকিবার দিবার নেয়।’

পৌরশহরের ছকিমুদ্দিনের ডাঙ্গা গ্রামের দিনমজুর হাছিনুর রহমান বলেন, ‘বাড়িতে সাগাই (স্বজন) আসলে ১৬০ টাকা দিয়ে ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনে আনচেনো। এখন সেই ব্রয়লার মুরগিরও কেজি ৩০০ টাকা। কয়দিন আগোত ডিম কিননো ৩০ থেকে ৩২ টাকা হালি। এখন সেই ডিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর কী খামো? সউগ জিনিসোত আগুন ধরছে। হামরা যে কত কষ্টত আছি, বলি শেষ করা যাবার নেয়। আর মন্ত্রী চেয়ারোত বসি এসির বাতাস খায় আর বলেন হামরা না কি বেহেশতত আছি।’

শাহাপুর গ্রামের এমদাদুল হক জানান, আলু, বেগুন, পটোল, মরিচসহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। কিছু কাঁচামালের দাম আরও বেশি। বাজার করতে গেলে মাথা গরম হয়ে যায়।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সব জিনিসের ওপর তার প্রভাব পড়েছে। সত্যিই দিনমজুর ও নিম্নবিত্ত কৃষকেরা হিসাব মেলাতে পারছেন না। কারণ তাঁদের ব্যয় বাড়লেও আয় বাড়েনি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ