হোম > ছাপা সংস্করণ

পিঠা পার্কের ৫ বছর

জাহিদ হাসান, যশোর

বাংলাদেশে পিঠার রয়েছে এক প্রাচীন ঐতিহ্য। কিন্তু সময়ের প্রবাহে পিঠার গ্রহণযোগ্যতা কমেছে বেশ খানিকটা। দেশীয় ঐতিহ্যের পিঠার সম্ভার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে অন্য রকম এক সংগ্রামে নামে আইডিয়া পিঠা পার্ক। শুধু ফিরিয়ে আনাই নয়, নতুন প্রজন্মের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠার পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠনটি ইতিমধ্যে পাঁচ বছর পূর্ণ করেছে।

মাত্র কয়েকজন সদস্য নিয়ে পথচলা শুরু হওয়া সংগঠনটির পাঁচ বছরে কলেবর বেড়েছে অনেক। এখানে কলেজশিক্ষার্থীদের বিকল্প উপার্জনের পাশাপাশি লভ্যাংশের পুরোটা দিয়ে চলছে বিভিন্ন সামাজিক কাজ। তাই প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যতিক্রমী এক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে আইডিয়া পিঠা পার্ক। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী ‘পিঠা পার্বণ’ উৎসব শেষ করেছে সংগঠনটি।

আইডিয়া পিঠা পার্ক মূলত শিক্ষার্থীদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির একটি উদ্যোগ এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান। যশোরের খড়কী শাহ আবদুল করিম রোডে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১০১ রকম পিঠা দিয়ে। এখন সেখানে ১৩০ রকমের ঝাল-মিষ্টি পিঠা পাওয়া যায়। থরে থরে সাজানো পিঠা দেখে চমকিত হবেন যে কেউ। যেসব পিঠায় দাদি-নানিদের স্পর্শ ছিল কিন্তু শহুরে জীবনের যান্ত্রিকতায় হারিয়ে যেতে বসেছে, সেসব পিঠা এখানে একত্র হয়ে নতুন প্রাণ পেয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে পিঠার স্বাদ নিচ্ছে মানুষ। সংগঠনটিতে কাজ করা শতাধিক স্বেচ্ছাসেবীর সবাই কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দিয়ে তৈরি আইডিয়া পিঠা পার্কের পণ্য এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

উদ্যোক্তারা জানান, পিঠা পার্ক থেকে অর্জিত লভ্যাংশ শুধু সদস্যরাই নেন না; বরং এর একটা বড় অংশ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ এবং সামাজিক কাজের জন্য ব্যয় করা হয়। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই সংগঠনের সদস্যরা কয়েক বছর ধরে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে খাবার ও পোশাক বিতরণ করছেন। এ ছাড়া সংগঠনটি রোজার মাসেও বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে থাকে।

আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার উদ্যোক্তা যশোর সরকারি এমএম কলেজের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহীন। তিনি জানান, প্রথমে এর লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। শিক্ষার্থীরা চাকরির পেছনে না ছুটে যেন কর্মমুখী হতে পারে, সে লক্ষ্য নিয়ে মাত্র তিন হাজার টাকা দিয়ে যাত্রা শুরু হয় সংগঠনটির। শুরুতে আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থাকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। জায়গার সংকটে নিজের বাসা ছেড়ে দিয়ে ভাড়া বাসায় থেকেছেন হামিদুল হক শাহীন।

পিঠা পার্কে পাটিসাপটা, পাকান, পুলি, ভাপা, চিতইসহ দেশীয় ১৩০ রকমের পিঠা তৈরি করা হচ্ছে। হামিদুল হক শাহীনের মতে, ‘আজকের জনপ্রিয় ফাস্ট ফুড কোনো নিক্তিতেই এ দেশের পিঠাপুলির চেয়ে এগিয়ে ছিল না। কিন্তু বড় পুঁজি আর শক্তিশালী মার্কেটিং ব্যবস্থা এ দেশের খাদ্যাভ্যাসটাই বদলে দিয়েছে! এর প্রভাবে আমরা হারাতে বসেছি আমাদের বৈচিত্র্যময় পিঠার সম্ভার।’ দেশীয় ঐতিহ্যের পিঠার সম্ভার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তাঁরা যে সংগ্রামে নেমে ছিলেন, সেটা সফল হয়েছে বলে মনে করেন হামিদুল হক শাহীন। তিনি বলেন, ‘আমরা অবাক হয়ে লক্ষ করেছি যে মানুষ পিঠাকে সাদরে গ্রহণ করেছে।’

আইডিয়া পিঠা পার্কের কো-অর্ডিনেটর সোমা খান বলেন, ‘আমরা মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি যে পিঠা শুধু শীতের খাবার নয়, এটি সব ঋতুর খাবার। পিঠা নিয়ে এত দূর আসা যায়, এটা আমাদের কাছে অকল্পনীয় ছিল। পিঠা নিয়ে আমাদের আরও দূরে যাওয়ার ইচ্ছা।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ