সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মারা যান আসামের জনপ্রিয় সংগীতিশিল্পী জুবিন গর্গ। তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে দুর্ঘটনার কথা জানালেও অনেকেই ষড়যন্ত্রের আঁচ পেয়েছিলেন। কেউ কেউ দাবি করছিলেন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে জুবিনকে। রহস্য উন্মোচনে একাধিক তদন্ত দল গঠনের নির্দেশ দেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। গত শুক্রবার আসাম পুলিশের বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) আড়াই হাজার পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করেছে, যেখানে চারজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দাখিল করা চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মোহন্ত, জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা, ব্যান্ডের ড্রামার শেখর জ্যোতি গোস্বামী এবং গায়িকা অমৃতপ্রভা মোহন্ত। এ ছাড়া জুবিন গর্গের চাচাতো ভাই পুলিশ কর্মকর্তা সন্দীপন গর্গের বিরুদ্ধেও অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্তের শুরুতেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জুবিন গর্গের মৃত্যু তদন্তের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে এসআইটি (দ্য স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) গঠন করে আসাম সরকার। ভারতীয় একাধিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত তিন মাসে প্রায় ৩০০ জনকে জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। একটি টিম সিঙ্গাপুরে গিয়েও তথ্য-প্রমাণাদি সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হওয়ার পরই জুবিনের সমাধিস্থলে ফুল, মোমবাতি হাতে ভিড় জমিয়েছিলেন ভক্তরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জুবিনের স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি, ভেঙে পড়েন কান্নায়। এ সময় গরিমা বলেন, ‘আমি ভাবতেই পারছি না, জুবিনের মতো মানুষকেও কেউ নিজের স্বার্থে খুন করতে পারে! গোটা জীবন যে মানুষটা অন্যের জন্য বিলিয়ে দিল। নিজের সময়, অর্থ, মন—সবটাই তো চিরকাল বিলিয়ে গেছে সে। গত তিন মাস এসআইটি প্রচুর পরিশ্রম করেছে। যার ফলাফল মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে মিলে গেছে। এখন বাকি সব নির্ভর করছে বিচারব্যবস্থার ওপর। দোষী সাব্যস্তদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে।’