পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) গবেষণাকেন্দ্রিক সংগঠন পাবিপ্রবি গবেষণা সংসদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নতুন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। আয়োজনটি ছিল গবেষণানির্ভর নতুন এক যাত্রার সূচনা।
বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে গবেষণা উচ্চশিক্ষার অপরিহার্য ভিত্তি হলেও দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান স্নাতকের শেষ বর্ষে। তার আগে কাঠামোগতভাবে গবেষণা শেখার বা হাতে-কলমে অনুশীলন করার ব্যবস্থা সীমিত। থিসিস বা প্রকল্প করলেও তা আন্তর্জাতিক মানের জার্নালে প্রকাশের সুযোগ কম। এই বাস্তবতায় ২২ এপ্রিল একদল তরুণ গবেষণাপ্রেমী শিক্ষার্থীর উদ্যোগে জন্ম নেয় পাবিপ্রবি গবেষণা সংসদ।
পিইউএসটি রিসার্চ সোসাইটি ক্যাম্পাসে গবেষণাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে কার্যক্রম করে যাচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে কলমে প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং, ডেটা অ্যানালাইসিস ও গবেষণাপদ্ধতি শেখানো কর্মশালা, বৈজ্ঞানিক লেখালেখি শেখার সেশন কিংবা আন্তর্জাতিক মানের কনফারেন্সে অংশগ্রহণ। অনলাইনে নিয়মিত ফ্রি ওয়েবিনার আয়োজন করে সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক গবেষণা পরিপ্রেক্ষিতের সঙ্গে পরিচিত করাচ্ছে।
সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ গবেষণা সংসদের সঙ্গে সহযোগিতায় কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি ক্যানসার কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ট্রাস্ট বাংলাদেশ (সিসিআরটিবি) এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্পৃক্ত প্ল্যাটফর্ম রিসার্চ গেটওয়ের সঙ্গে যৌথ কার্যক্রমও করছে। এই সহযোগিতা শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা বাড়ানো ছাড়াও গবেষণাকে বাস্তবমুখী করার সুযোগ তৈরি করছে।
নবীন সদস্য মারিয়া ফারজানা পুষ্পিতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে গবেষণার প্রতি আগ্রহ ছিল। কিন্তু প্রকল্প বা থিসিসের আগে গবেষণার ভিত্তি শেখার সুযোগ ছিল না। পিইউএসটি রিসার্চ সোসাইটি সেই সুযোগ তৈরি করেছে। এটি সত্যিই এক অপার সম্ভাবনার দরজা।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গবেষণা ছাড়া উচ্চশিক্ষা পূর্ণতা পায় না। নতুন শিক্ষার্থীরা গবেষণা শুরু করতে চাইলেও দিকনির্দেশনার অভাবে দ্বিধায় থাকে। আমরা তাদের জন্য একটি সুশৃঙ্খল প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছি। পথচলা এখনো ছোট পরিসরে, তবে আমরা বিশ্বাস করি, এটি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বড় সংগঠনে পরিণত হবে।’
শিক্ষক ও উপদেষ্টা ড. কামরুজ্জামান বলেন, গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মর্যাদা এনে দিতে পারে। শিক্ষার্থীরা যত বেশি গবেষণায় যুক্ত হবে, তাদের চিন্তাশক্তি, বিশ্লেষণী দক্ষতা ও মেধার বিকাশ তত বাড়বে। তাই সংগঠনটিকে এগিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
নবীনবরণ উৎসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণার প্রতি আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। পিইউএসটি রিসার্চ সোসাইটি এখন নতুনদের কাছে গবেষণাকে আকর্ষণীয় ও সহজলভ্য করে তুলেছে, যা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অগ্রগতি ছাড়াও ভবিষ্যতে গবেষণা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক অবদানের পথ খুলবে।