ঘর থেকে টেনে হিচড়ে বের করে পরিবারের সদস্যের চোখের সামনেই ইউপি সদস্য পনু মিয়াকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষরা। পরে রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান তিনি। এদিকে আজ বুধবার বাবার মরদেহ মর্গে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিতে যায় তাঁর মেয়ে সানজিদা ইসলাম রিয়া (১৭)।
আয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘সানজিদা কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের জর্জিয়া কিন্ডারগার্টেন থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এরই মেধ্য সে দুটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ওর বাবা দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়ে নিহত হয়। কিন্ত মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আজ বুধবার বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে বাবার মরদেহ দেখে এরপর পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছে সানজিদা। আমরা তাকে সার্বিক সহযোগীতা করেছি।’
পরীক্ষা শেষে সানজিদা ইসলাম রিয়া আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘বাবার মরদেহ মর্গে দেখে পরীক্ষা দিতে যাওয়া! আমার কাছে এর চেয়ে কষ্টের আর কিছুই নেই। বাবার স্বপ্ন ছিল আমি লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হব। আমি বাবাকে তো আর ফিরে পাব না। পরীক্ষাটা না দিলে আমার বাবার স্বপ্ন ভেঙে যেত। তাই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এরই মধ্যে উভয় পক্ষের ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভুক্তভোগী কোনো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছে এমন অভিযোগ আমরা এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঠান্ডা গ্রুপ ও পনু গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জেরেই নির্বাচনের দেড় বছর পর গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম পনুকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এর আগেও পনুকে বেশ কয়েকবার কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ঠান্ডা বাহিনী।