ইন্দোনেশিয়ার উদ্ধারকর্মীরা একটানা লড়াই করে চলেছেন। টানা এক সপ্তাহের ঘূর্ণিঝড়জনিত প্রবল বর্ষণে ডুবে যাওয়া বহু অঞ্চল এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৩ জনে এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে, সংখ্যা আরও বাড়বে। খবর আল জাজিরার
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বিএনপিবি আজ রোববার জানিয়েছে, পশ্চিম সুমাত্রার আগাম জেলায় আরও লাশ উদ্ধার হওয়ার পর পুরো সপ্তাহে বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা ৩০৩ জনে পৌঁছেছে। এখনো শতাধিক মানুষ নিখোঁজ। বিএনপিবি বলেছে, এই দুর্যোগে পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
বিএনপিবি প্রধান সুহারিয়ান্তো বলেন, ‘মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বহু লোক এখনো নিখোঁজ এবং অনেক এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতেও পারেননি।’
শুক্রবার রাতে পশ্চিম সুমাত্রা প্রদেশের প্রাথমিক মৃত্যুর সংখ্যা ২৩ থেকে হালনাগাদ করে প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের মুখপাত্র ইলহাম ওয়াহাব জানান, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৬১ হয়েছে, নিখোঁজ ৯০ জন। ইলহাম বলেন, ‘মোট ৭৫ হাজার ২১৯ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছে, আর পশ্চিম সুমাত্রা জুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ৮০৬।’
উত্তর সুমাত্রা অঞ্চলে পরে আরও ১১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। আর আচেহ প্রদেশে মারা গেছে কমপক্ষে ৩৫ জন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। মালাক্কা প্রণালিতে মালয় উপদ্বীপ ও সুমাত্রার মাঝখানে বিরল উষ্ণমণ্ডলীয় ঝড় তৈরি হওয়ার পর তিন দেশে মোট প্রায় ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের আটটি প্রদেশে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সেখানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৩৫ লাখ মানুষ। প্রতিবেশী মালয়েশিয়ায় মারা গেছে দুজন।
শুক্রবার রাতে প্রবল বর্ষণ কমলেও ইন্দোনেশিয়ায় বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। হাজারো পরিবার আশ্রয়শিবিরে বা খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে।
উত্তর সুমাত্রায় নদীগুলো উপচে পড়েছে। পাহাড়ি গ্রামগুলোতে নেমে এসেছে বন্যার ঢল। মানুষ ভেসে গেছে, হাজারো ঘরবাড়ি ও স্থাপনা ডুবে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর অনেকটা এখনো উদ্ধারকর্মীদের নাগালের বাইরে। রাস্তা ভাঙা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, সেতু ধসে পড়েছে, আবার কোথাও তীব্র স্রোতে রাস্তাও তলিয়ে গেছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাবেও কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
উত্তর সুমাত্রার কেন্দ্রীয় তাপানুলি জেলা ও আশপাশের দুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও সরঞ্জাম পৌঁছাতে ত্রাণবাহী বিমানগুলো অব্যাহতভাবে কাজ করছে।