সুদানের দারফুর অঞ্চলের উত্তর ও পশ্চিম করদোফান অঞ্চলজুড়ে গতকাল শনিবারও ব্যাপক হামলা চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী–এসডিএফ। দেশটির দক্ষিণে চলা তীব্র সংঘর্ষের এই নতুন অধ্যায় নিশ্চিত করেছে সামরিক সূত্র। জানিয়েছে, বিদ্রোহী সশস্ত্র আধা–সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে এসডিএফ।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার করদোফানের উম সামিমা নামের কৌশলগত এলাকায় সকাল থেকেই ভারী অস্ত্রের গর্জন শোনা। এল-ওবেইদের পশ্চিমে মাত্র পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরের এই বদ্বীপ-সদৃশ সংযোগস্থলই উত্তর ও পশ্চিম করদোফানকে জুড়ে রেখেছে। ওই পথেই মুখোমুখি হয়েছে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ।
আনাদোলুকে সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উম সামিমায় সেনারা ভারী এবং হালকা অস্ত্রের সমন্বিত আক্রমণ চালিয়ে উত্তর করদোফানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বিদ্রোহীদের দখল ভাঙতে চালানো আক্রমণ আরও ঘনীভূত হয়েছে। সূত্রগুলো আরও বলেছে, পশ্চিম করদোফানের আল-খুয়াই এলাকার পশ্চিম অক্ষ বরাবরও অগ্রযাত্রা চলছে। এল-ওবেইদ থেকে প্রায় এক শ কিলোমিটার দূরেই এই অভিযান এগোচ্ছে সেনারা, সঙ্গে আছে তাদের মিত্র বাহিনীগুলো।
মঙ্গলবার সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, করদোফানজুড়ে কয়েকটি ফ্রন্টে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে। বিশ্লেষকেরা এটিকে দারফুরের দিকে এগোনোর লক্ষণ হিসেবে দেখছেন; অঞ্চলটি এখন পুরোপুরি আরএসএফের দখলে। অন্যদিকে আরএসএফ দাবি করেছে, উত্তর করদোফানের জাবাল আবু সুনুন, জাবাল ইসা ও আল-আইয়ারা এলাকায় তারাও অগ্রযাত্রা বজায় রেখেছে।
এর আগে, গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ এল-ফাশের শহর দখল করে এবং সেখানে সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যা চালায় বলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবেদন বলছে।
পশ্চিম সুদানের দারফুরের পাঁচটি অঙ্গরাজ্যই এখন আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে। বিপরীতে সেনাবাহিনী দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব ও কেন্দ্রের মোট ১৩টি রাজ্যের অধিকাংশ অংশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, যার মধ্যে রাজধানী খার্তুমও রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাবাহিনী ও আরএসএফ এক ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত। এই লড়াই অসংখ্য প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, কয়েক মিলিয়ন মানুষকে ঘরছাড়া করেছে, আর তৈরি করেছে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।