হোম > অর্থনীতি > ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান

আগামী সপ্তাহে প্রশাসক পাঁচ ইসলামী ব্যাংকে

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 

মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার, মো. শওকাতুল আলম, মো. সালাহ উদ্দিন, মো. মোকসুদুজ্জামান, মোহাম্মদ আবুল হাসেম (বাঁ থেকে)। ছবি: সংগৃহীত

দেশের ব্যাংক খাতে নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে। ইতিহাসে প্রথমবার একসঙ্গে পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করে গঠন করা হবে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান—ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক। এই রূপান্তরের আগে প্রতিটি ব্যাংকে একজন করে প্রশাসক বসানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশাসকদের নামও ইতিমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। তাঁরা সবাই বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা। আইনি পর্যালোচনা শেষ হলে এবং সংশ্লিষ্ট নামগুলোর বিষয়ে নতুন কোনো আপত্তি না এলে প্রশাসকেরা দ্রুত দায়িত্ব নিতে পারবেন। কারা কোন ব্যাংকে প্রশাসক হবেন, সেটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আগামী সপ্তাহের মধ্যে পরিষ্কার হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী নির্বাচিত প্রশাসকদের মধ্যে এক্সিম ব্যাংকের দায়িত্ব পাচ্ছেন নির্বাহী পরিচালক মো. শওকাতুল আলম, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব পাচ্ছেন নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রশাসক হচ্ছেন নির্বাহী পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন। ইউনিয়ন ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে টাঁকশালের পরিচালক মো. মোকসুদুজ্জামানকে প্রশাসক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি ব্যাংকে প্রশাসকের পাশাপাশি আরও একজন অতিরিক্ত পরিচালক, একজন যুগ্ম পরিচালক ও একজন উপপরিচালককে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ফলে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশাসক টিম দায়িত্ব নেবে।

আইনি জটিলতা এড়াতে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে আলোচনা প্রায় শেষ হয়েছে। তাঁদের লিখিত মতামত পেলেই প্রশাসক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের সভায় যুক্ত করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারির পরেই প্রশাসকেরা দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।’

পাঁচ ব্যাংকের এ অবস্থায় পৌঁছানোর পেছনে দীর্ঘ অনিয়ম ও দুর্নীতির ইতিহাস রয়েছে। এসব ব্যাংক থেকে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় এবং বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়। ফলে ব্যাংকগুলো ভয়াবহ খেলাপির ফাঁদে আটকে পড়ে।

বর্তমানে পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত আমানত প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা, বিপরীতে ঋণ ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। এর ৭৬ শতাংশই খেলাপি। ইউনিয়ন ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ৯৮ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটিতে ৯৭, গ্লোবালে ৯৫, সোশ্যাল ইসলামীতে ৬২ দশমিক ৩ এবং এক্সিমে ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ। ফলে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, এ জন্য প্রয়োজন ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ২০ হাজার ২০০ কোটি, আমানত বিমা ট্রাস্ট থেকে আসবে সাড়ে ৭ হাজার এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা দেবে আরও সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার শেয়ার। সরকারের সম্মতিও মিলেছে ইতিমধ্যে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এই সিদ্ধান্তকে ব্যাংক খাত সংস্কারের নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। তবে সফলভাবে পরিচালনার জন্য চেয়ারম্যান ও এমডি পদে সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচনে ব্যর্থ হলে আবারও রাজনৈতিক প্রভাবে পথচ্যুত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।’

একীভূত পাঁচ ব্যাংকের নামের সাইনবোর্ড বদলাচ্ছে আজ-কালের মধ্যেই: গভর্নর

ইস্টার্ন ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন

আইডিআরএর প্রতিবেদন: নিয়ম ভেঙে বাকিতে ব্যবসা কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্সের

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

একীভূত ৫ ব্যাংকের গ্রাহকদের অর্থ ফেরত: নির্দেশনা না থাকায় অনিশ্চয়তা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকের টাকা ফেরতে নতুন আশা দিলেন গভর্নর

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন: কোটিপতি হিসাব বাড়ছেই

এক ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৬ কোটি টাকা জরিমানা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামি ব্যাংক পেল চূড়ান্ত অনুমোদন