হোম > অর্থনীতি

থামছে না নকল ওষুধ বাণিজ্য

আয়নাল হোসেন, ঢাকা

কেরানীগঞ্জের কালিন্দী ভাংনা মসজিদ রোডে অবস্থিত মেসার্স আসলাম ফার্মার মালিক শফিক হোসেন গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ফার্মেসির জন্য মিটফোর্ড ও বাবুবাজারের বিভিন্ন দোকান থেকে বেশ কিছু ওষুধ কেনেন। এসব ওষুধ কেনার পর বিক্রেতারা সাদা একটি স্লিপে ওষুধের নাম ও দাম লিখে দেন। এভাবেই সাদা স্লিপের মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়বিক্রয় হচ্ছে।

আবার ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরাও চালান ছাড়াই ওষুধ সরবরাহ করছেন। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছিল বৈধ উৎস থেকে চালানের মাধ্যমে ওষুধ ক্রয় বা সংগ্রহ এবং রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। ছয় বছর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারের ওই নির্দেশনা মানছে না কেউ। পুরান ঢাকার মিটফোর্ড, বাবুবাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

শফিক হোসেন জানান, মিটফোর্ড ও বাবুবাজারের দোকান থেকে ওষুধ কেনার পর সংশ্লিষ্ট দোকানের প্যাডে ওষুধের নাম ও মূল্য লিখে দিচ্ছে না। এটা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে।

মিটফোর্ডের ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধি গোপাল চন্দ্র সাহা জানান, যাঁরা ওষুধ কিনতে আসেন তাঁরা অনেক তাড়াহুড়ো করেন। প্যাডে লেখার মতো সময় তাঁরা দেন না। আর এ জন্য দ্রুত স্লিপে লিখে বিদায় করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাজারে নকল-ভেজাল ওষুধ হরহামেশাই বিক্রি হচ্ছে। যেসব ওষুধ দামি এবং বেশি ব্যবহৃত হয়, সেসব ওষুধ নকল ও ভেজাল বেশি হচ্ছে। নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি বন্ধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রায়ই অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ওষুধ জব্দ এবং জেল-জরিমানাও করেছে। কিন্তু এরপরও থেমে নেই এসব ওষুধ বিক্রি।

ঔষধ প্রশাসনের ২০১৯-২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত নকল-ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ, মিসব্যান্ডেড, অনিবন্ধিত ওষুধ বিক্রির অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১১ কোটি ৬৯ লাখ ১৮ হাজার ৭০৮ টাকা জরিমানা আদায় এবং ৪৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় ২৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার ওষুধ জব্দ করা হয়। ড্রাগ কোর্টে দুটি ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ৪১টি মামলা হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে নকল ও ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধ বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ওষুধবিষয়ক সব পক্ষের উপস্থিতিতে নকল ও ভেজাল প্রতিরোধে বৈধ উৎস থেকে পাকা চালানের মাধ্যমে ওষুধ সংগ্রহ এবং সেটির রেকর্ড সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি (বিসিডিএস), ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের ওই সিদ্ধান্ত মানা হচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাবেক পরিচালক জাকির হোসেন রনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওষুধ ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে শক্তভাবে নীতিমালা তৈরি করতে হবে। বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ, স্পর্শকাতর নানা ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। এসব ওষুধ বিক্রয়ে কোনো অনিয়ম হলে শাস্তির বিধান রাখতে হবে। বিপণন ব্যবস্থাকে শক্তভাবে তদারকি না করতে পারলে বাজার থেকে নকল-ভেজাল ওষুধ বন্ধ করা যাবে না বলও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এস এম সফিউজ্জামান বলেন, চালানে নয়, লাইসেন্সবিহীন দোকানে বিক্রি করা যাবে না বলে তাদের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু দেশের অধিকাংশ ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট নেই। মডেল ফার্মেসি তৈরির পরও এটি কার্যকর হচ্ছে না। ঔষধ প্রশাসনও সঠিক তদারকি করছে না।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আইয়ূব হোসেন বলেন, পাকা চালানের মাধ্যমে ওষুধ কেনাবেচার নির্দেশনা রয়েছে। ফার্মেসির লাইসেন্স নবায়ন করতে এলে তাদের এমন নির্দেশনা মানার তাগিদ দেওয়া হয়। কিন্তু তা তদারকি করার মতো পর্যাপ্ত জনবলের ঘাটতি রয়েছে।

নির্বাচনে ভোটার ও রাজনীতিবিদের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে: দেবপ্রিয়

ক্রেতাদের হাতে উপহারের ফ্রিজ-টিভি হস্তান্তর করল ওয়ালটন

ভারতের ওপর কেন ৫০ শতাংশ শুল্ক দিল মেক্সিকো, নয়াদিল্লির ক্ষতি কতটা

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

ঢাকা চেম্বারের সেমিনার: বিদেশে চিকিৎসার ব্যয় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার

বছরের বড় হাটে দুই কোটি বেচাকেনা, ঊর্ধ্বমুখী দাম

ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার: বিদেশে বাংলাদেশিদের খরচ বাড়ল এক মাসেই ৫১ কোটি

এআই ডেটা সেন্টারে ব্যাপক চাহিদা, তামার দাম ১২ হাজার ডলার ছুঁই ছুঁই

জেসিআই বাংলাদেশের নতুন প্রেসিডেন্ট রাফি আহমেদ

চার গুণ বাড়িয়ে পেঁয়াজ আমদানি দৈনিক ৬ হাজার টন