করোনা মহামারির কারণে প্রায় ১৬ মাস বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অনলাইনে চলছে ক্লাস–পরীক্ষা। এতে কমেছে লেখার কাগজের চাহিদা। ফলে ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে কাগজ ব্যবসায়ীদের।
বিক্রি না থাকায় অনেক ব্যবসায়ী ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিয়েছেন। দোকান ভাড়াও দিতে পারছেন না অনেকে। সব মিলিয়ে দুরবস্থায় আছেন কাগজ ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর পুরান ঢাকার নয়াবাজার, বাবুবাজার, জিন্দাবাহার ও আশপাশের এলাকায় দুই হাজারের অধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা কাগজ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁদের ব্যবসার বড় অংশই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের খাতা ও গাইডবই ব্যবহারও কমেছে। এ ছাড়া ডায়েরি, ক্যালেন্ডার ও সামাজিক অনুষ্ঠানের কার্ডের ব্যবহার নেই বললেই চলে। সব মিলিয়ে বড় মন্দা চলছে কাগজ ব্যবসায়। বেকার হয়ে পড়েছেন এ কাজে জড়িত শ্রমিক, ট্রলিচালক, বাইন্ডিং কারখানার শ্রমিক সবাই।
বাবুবাজারের প্রত্যাশী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কাগজ ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেকের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অনেকেই বসে বসে পুঁজি খাচ্ছেন। অনেকে আবার পুঁজি শেষ করে গ্রামে চলে গেছেন। ব্যবসায়ীদের সিংহভাগই ব্যাংকঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না।
বাবুবাজারের ফাল্গুনী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ব্যবসা ভালোই ছিল। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যবসা কমতে থাকে। চলতি বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তাঁরা। যেসব ব্যবসায়ী দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করতেন, ঋণের দায়ে তাঁরা ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। ব্যাংকঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। কাগজ ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুদান পাননি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কত দিন লাগবে তার নিশ্চয়তা নেই। সব মিলে খুবই নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছেন কাগজ ব্যবসায়ীরা।
সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ শাহজাহান কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, কাগজ শিক্ষা উপকরণ। কিন্তু স্কুল–কলেজ বন্ধ থাকায় কাগজের ব্যবসা অনেক খারাপ যাচ্ছে। অনেকে স্টাফদের বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না। যাঁরা ভাসমান কাগজের ব্যবসা করতেন, তাঁদের সবাই গ্রামে চলে গেছেন।